হোম অন্যান্যসারাদেশ সাতক্ষীরার আশাশুনির গদাইপুরে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১

সাতক্ষীরার আশাশুনির গদাইপুরে বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১

কর্তৃক
০ মন্তব্য 108 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামে একটি ঘের থেকে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলায় আহত মো. শরবত আলী মোল্লা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১১এপ্রিল) ভোর রাত ১টার দিকে মারা গেছেন। এঘটনায় পুলিশ খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেয়াজ ডালিমের আপন দুই ভাইসহ ১০জনকে গ্রেফতার করেছে।

নিহত মো. শরবত আলী মোল্লা (৫৫) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামের মৃত ছামছুর মোল্লার ছেলে। এঘটনায় আহত হয় আরো ৭জন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামের মৃত মোজাহার সরদারের ছেলে ও ইউপি চেয়ারম্যান ডারিমের আপন ভাই আব্দুস সালাম বাচ্চু ও জুলফিকার আলী জুলি, একই গ্রামের মৃত ছেয়ামুদ্দিন সরদারের ছেলে মোহাম্মাদ আলী, মৃত ছবেদ মোল্লার ছেলে জামশেদ মোল্যা, মৃত ফজলুল হক মোল্লার ছেলে সাদ্দাম হোসেন মোল্লা , আব্দুস সালামের ছেলে মাসুমবিল্লা কাইফ, আক্কাস সরদারের ছেলে মফিজুল ইসলাম, পিরোজপুর গ্রামের ওমর আলী সরদারের ছেলে রিপন, খালিয়া গ্রামের এবাদুল সানার ছেলে শামিম হোসেন ও দেয়াবকসিয়া ফটিকখালী গ্রামের অমল কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডল।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান ও আশাশুনি উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেয়াজ ডালিমের বাড়ির সামনে হরিখালী এলাকায় গদাইপুর গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মাদ মোল্লার ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু’র ৫০/৬০ বিঘা জমির একটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। বুধবার রাতে ওই ঘের থেকে ঘুনি ঝেড়ে মাছ নিয়ে আসার ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার ঘের মালিক মঞ্জু আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলা করায় বৃহস্পতিবার রাতে ডালিমের লোকজন ওই ঘের থেকে সবগুলো ঘুনি ঝেড়ে সমুদয় মাছ ধরে নিয়ে আসে। এঘটনার পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চেয়ারম্যান ডালিমের ছোট ভাই আহসান হাবিব টগর স্থানীয় গদাইপুর মাছের সেটে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে বেদম মারপিট করে। এতে টগর গুরুতর আহত হয়।

এদিকে ছোট ভাই টগর আহত হওয়ার খবর জানতে পেরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চেয়ারম্যান ডালিমের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের একদল সন্ত্রাসী লোহার রড, রাম দা ও লাঠিসোটা নিয়ে গদাইপুর গ্রামের মোল্লার বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে মারপিট ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। এসময় ওই গ্রামের মুকুল মোল্লা , আসাদুল মোল্লা , হাফিজুল মোল্লা , কালাম মোল্লা , শাহাজান মোল্লা , তরিকুল মোল্লা , ও শরবত মোল্লাসহ কমপক্ষে ১৫টি পরিবারের ঘরবাড়ি ও রান্নাঘর ভাংচুর করে সন্ত্রাসীরা।

এসময় সন্ত্রাসী হামলায় গদাইপুর গ্রামের মৃত ছামছুর আলী মোল্লার ছেলে মো. শরবত আলী মোল্লা (৫৫) ও তার স্ত্রী শেফালী খাতুন(৪৮) মৃত আইজুদ্দিন মোল্লার ছেলে রব্বানী মোল্লা (৬৫), বারেক মোল্লার ছেলের লাদেন মোল্লা (১৮), পিনাক বিশ্বাসের ছেলের শরিমল বিশ্বাস, শরবত মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্যা (২৭) ও হাবিবুল্লাহ মোল্লার স্ত্রী আরিফা খাতুন আহত হয়। আহতদের মধ্যে শরবত মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্যা ও হাবিবুলাহ মোল্লার স্ত্রী আরিফা খাতুনকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় বাকিদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শরবত আলী মোল্লা ও তার স্ত্রী শেফালী খাতুনকে বিকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার ভোর রাত ১টার দিকে শরবত আলী মোল্লা মারা যান।

এদিকে, সরবতের মৃত্যুর খবরে জানার পর গ্রামের লোকজন একত্রিত হয়ে চেয়ারম্যান ডালিমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর করে। পরে আশাশুনি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

অপরদিকে চেয়ারম্যান ডালিমের ছোট ভাই আহত আহসান হাবিব টগরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠনো হয়েছে। তার অবস্থাও আশংকাজনক বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেয়াজ ডালিমের দুই ভাইসহ মোট ১০জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন