আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার মধ্যেই একে অপরকে সতর্ক করলো রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।
ব্রাসেলসে ন্যাটোর সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সীমান্তে ন্যাটোর সেনাদের উপস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেবে না মস্কো।
তবে ইউক্রেন ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে রাশিয়াকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া-ন্যাটো আলোচনার মধ্যেই রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে এক ইউক্রেন সেনা নিহতের অভিযোগ উঠেছে।
ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা সমাবেশ নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যেই ব্রাসেলসে বৈঠকে বসলো রাশিয়া ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রতিনিধিরা। চলমান সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও দু’পক্ষই নিজের অবস্থানে অনড়।
ইউক্রেনে আক্রমণের পরিকল্পনার অভিযোগ নাকচ করে দিলেও যথারীতি রাশিয়ার মাথা ব্যথা সামরিক জোট ন্যাটোকে নিয়েই। রুশ অঞ্চলে জোটটির বিস্তৃতি বাড়ানো নিয়ে সতর্ক করেছে রাশিয়া।
এ নিয়ে একটি খসড়া চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো। আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তার স্বার্থে সম্পর্ক অটুট রাখার আহ্বান জানান রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্যথায় জোটটির নিরাপত্তা অকল্পনীয় হুমকিতে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার গ্রুশকো বলেন, আমরা আজ যেসব প্রস্তাব দিয়েছি তার সব গুলোই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের পূর্বাঞ্চলে যেন ন্যাটো বাহিনী অগ্রসর না হয় সেটির উল্লেখও রয়েছে। অঞ্চলগুলোতে যেন সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হয় সেটি পরিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমান উত্তেজনামূলক পরিস্থিতি এড়াতে প্রাথমিকভাবে এটির বাস্তবায়ন সবচেয়ে জরুরি।
অন্যদিকে, রাশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন দাবি দাওয়া প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। তবে ইউক্রেন ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারমান।
মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শারমান বলেন, আমি মনে করি ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া আর যাই করুক না করুক ন্যাটো ও ন্যাটোর বাইরে যেসব দেশ রয়েছে তাদের সবাইকে এই ইস্যুতে এক করেছে। ন্যাটোর প্রতি অনেক দেশের সমর্থন আরো বেড়ে গেছে। রাশিয়া একটি শক্তিশালী দেশ। অথচ তারা ইউক্রেনকে হুমকি মনে করছে। আর সে দোহায় দিতে তারা সীমান্তে এক লাখ সেনা পাঠিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই সঙ্কটের সমাধানের জন্য রাশিয়ার এখনো সুযোগ রয়েছে। আমাদের মধ্যে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা হয়নি। তবে আশা করি ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন কিংবা সামরিক যে কোনো সংঘাত এড়াতে রাশিয়া আলোচনা অব্যাহত রাখবে।
আপাতত কোনো সমঝোতা না হলেও আলোচনা চলমান রাখতে রাশিয়া রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ। তবে ইউক্রেন ইস্যুতে এক বিন্দুও ছাড় দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশের প্রতিনিধিরা যখন আলোচনায় ব্যস্ত ঠিক তখন রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে এক ইউক্রেনের সেনা নিহতের অভিযোগ করেছে কিয়েভ। দেশটির পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হামলা চালায় বলেও অভিযোগ জেলেনস্কি সরকারের।