যশোর অফিস :
যশোর বাস মালিক সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টালবাহানা শুরু হয়েছে। কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইতিমধ্যে ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উড়ে এসে জগদ্দল পাথরের মত জুড়ে বসেছে। নির্বাচনকে কলুষিত করতে মাঠে নেমেছেন কতিপয় নেতা। তারা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ।
এদিকে, নির্বাচন বিলম্বিত হলে প্রশাসনের ওপর ক্ষমতা ছেড়ে দেবার জন্য সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে যশোর বাস মালিক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় সভাপতি নির্বাচিত হন আলহাজ আলী আকবর ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আব্দুস সালাম চাকলাদার। সে সময় আব্দুস সালাম চাকলাদার সমিতির সদস্য না হয়েও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সম্পাদক হন। এরই মধ্যে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে আব্দুস সালাম চাকলাদার ইন্তেকাল করেন। আব্দুস সালাম চাকলাদার ইন্তেকালের পর তার ছেলে আরিফ চাকলাদারও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গঠনতন্ত্র পরিপন্থিভাবে সাধারণ সম্পাদক হন।
এরই সাড়ে আট মাস পর (২০২১ সালের ৩১ জুলাই) সভাপতি আলহাজ আলী আকবরও করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। আলহাজ আলী আকবর ইন্তেকালের পর বদিউজ্জামানও একইভাবে ক্ষমতার প্রভাবে সভাপতি হন।
সূত্র জানায়, গত ৭ জুন যশোর বাস মালিক সমিতির নির্বাহী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী ২৮ জুলাই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। একই সাথে পবিত্র কাপুড়িয়াকে নির্বাচন পরিচালানা কমিটির চেয়ারম্যানও নির্বাচন করা হয়। সেই সাথে নির্বাচন পরিচালনার জন্য দুইজন আইনজীবী রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ওই সভার বিষয়ে নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ সাধারণ সদস্যদের জানায়, ২৮ জুলাই বাস মালিক মালিক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এরই মধ্যে এই নির্বাচন বিলম্বিত করতে নির্বাহী কমিটির কতিপয় নেতা টালবাহানা শুরু করেছে। তারা কেউই এখন নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না।
সূত্র জানায়, সমিতিকে কুক্ষিগত করার জন্য সভাপতি গঠনতন্ত্র সংশোধন করে একক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে সমিতির গঠনতন্ত্র কোন সদস্য চাইলে তাও দেওয়া হচ্ছে না।
সমিতির নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে বর্তমান সহ-সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, নির্বাচনের জন্য একটি প্যানেল হয়েছে। এই প্যানেল সম্পর্কে সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান পিন্টু বলতে পারবে।
সভাপতির মৃত্যুর পর সহ-সভাপতি সভাপতি হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইরে থেকে কেউ এসে সভাপতি হতে পারবে এমন একটি নিয়ম ছিল। যে কারণে আমি ইচ্ছা করে আর সভাপতি হয়নি।
নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান পিন্টু বলেন, প্রতি ৫ বছর পর পর সমিতির নির্বাচন হয়। সে সময় লোকজন নির্বাচন নিয়ে এতো হৈচৈ ছিলো না। এখন সময় পরিবর্তন হয়েছে। এখন সবাই নির্বাচন করতে চাই।
গঠনতন্ত্র সংশোধন হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারি না। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সব ক্ষমতার মালিক। তাদের সাথে কথা বললে ভালো হয়। তারাই সব কিছু বলতে পারবে। তবে এ টুকু বলতে পারি গঠনতন্ত্র সংশোধনের বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছিলো।
নির্বাচন বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ চাকলাদার বলেন, নির্বাচন বিষয়ে এখনো কোন সার্কুলার হয়নি। সার্কুলার হলে সবাই জানতে পারবে।
এ বিষয়ে সভাপতি বদিউজ্জামান বাবুলর কাছে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি। পরে ফোন দিচ্ছি। এরপর তিনি আর ফোন দেননি।