হোম অন্যান্য মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন অভিযান চলবে

মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন অভিযান চলবে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 49 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
আগামী ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান শুরু হচ্ছে। এবার আশ্বিনী পূর্ণিমার আগের ৪ দিন এবং অমাবস্যার পরের ৩ দিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন এই অভিযান চলবে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ এবং সারা দেশে ইলিশের প্রাপ্যতা, মূল্য ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, ইলিশের স্থায়িত্বশীল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মৎস্য সংরক্ষণ আইন-১৯৫০’ অনুযায়ী পরিপক্ক ইলিশ যাতে নিরাপদে ডিম দিতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য— সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মৎস্য অধিদফতর ঘোষণা করেছে, ২০২৫ সালের ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। আশ্বিনী পূর্ণিমার পূর্বের ৪ দিন এবং অমাবস্যার পরের ৩ দিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন এই অভিযান চলবে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের মতামত অনুযায়ী এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রজনন মৌসুমের পূর্ণিমা ও অমাবস্যা উভয় সময়ই ডিম পাড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, দুটি পর্যায় অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ প্রজনন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই কর্মসূচি ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ নামে পরিচিত।

এ সময় নদীতে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিক্রি, মজুদ ও বিনিময় সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। অভিযান পরিচালনায় মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অংশগ্রহণ করবে।

এবার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ৩৭টি জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার ১৪০ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ (চাল) দেওয়া হবে, পরিবার প্রতি বরাদ্দ থাকবে ২৫ কেজি করে চাল— যা পুরো কার্যক্রমে মোট ১৫ হাজার ৫০৩.৫০ মেট্রিক টন চাল প্রয়োজন হবে।

এ অভিযানের সময় জলসীমার বাইরে মাছ ধরা ট্রলারের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। নদীতে এই সময় ড্রেজিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হবে। একইসঙ্গে সমুদ্র, উপকূল ও মোহনায়ও প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ধরে ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।

গত বছর ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনের অভিযানে ২,১৬৯টি মোবাইল কোর্ট ও ৯,৮১৩টি অভিযানের মাধ্যমে ৫৪.৮৬ মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ, ৬১২.১১ লাখ মিটার জাল ধ্বংস এবং ৭৫.২৭ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নিষেধাজ্ঞার ফলে ৫২.৫ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। এর ফলে ৪৪.২৫ হাজার কোটি জাটকা/রেণু ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। এই ডিম থেকে উৎপন্ন রেণু বা পোনা (জাটকা) ভবিষ্যতে পরিপক্ক ইলিশে পরিণত হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান আগের বছরের তুলনায় আরও সংগঠিত ও কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন