হোম অন্যান্যসারাদেশ বেনাপোল বন্দরে আমদানি বাণিজ্য স্থবির, ৫০০০ ট্রাক আটকা পেট্টাপোল বন্দরে

বেনাপোল বন্দরে আমদানি বাণিজ্য স্থবির, ৫০০০ ট্রাক আটকা পেট্টাপোল বন্দরে

কর্তৃক
০ মন্তব্য 149 ভিউজ

মিলন হোসেন বেনাপোল :
বেনাপোল স্থলবন্দরে পণ্যজট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে। ধারনক্ষমতার চার গুণ পণ্য বন্দর অভ্যন্তরে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরে জায়গা না থাকায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রায় পাঁচ হাজার পণ্য বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। ফলে আমদানি বাণিজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরে জায়গার অভাবে পণ্য খালাসের দীর্ঘসূত্রিতাকেই দায়ি করছেন ব্যবসায়ীরা।

অবশ্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, করোনা মহামারির কারণে বন্দর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর হঠাৎ করে আমদানি বাড়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের আগে-পরে ১০ দিন শুধুমাত্র ভারত থেকে পণ্য এসেছে। বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য ডেলিভারি হয়নি। সরকারি বিধিনিষেধ, বর্ষা ও ফেরিঘাটের অবস্থা খারাপ হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী বন্দর থেকে পণ্য খালাস না নেওয়ায় পণ্যজট বেড়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, ভারত থেকে আগে প্রতিদিন সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক মালামাল বেনাপোল বন্দরে আসতো। এখন এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫০টির মতো।

বন্দরের জায়গা সঙ্কট ও যন্ত্রপাতি স্বল্পতার রয়েছে। ইতোমধ্যে ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বৃহৎ দুটি ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পণ্য ধারণক্ষমতা বেড়েছে। ২৫ একর জায়গা আমরা অধিগ্রহণ করেছি। আরো সাড়ে ১৬ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। শিগগিরই ২৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বেনাপোলে কার্গো ভেহিক্যাল টারমিনাল স্থাপনের কাজ শুরু হবে। করোনার কারণে কাজ একটু পিছিয়ে যাচ্ছে। এসব বাস্তবায়ন হলে এই বন্দরে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, বেনাপোল বন্দরে জায়গা সঙ্কট দীর্ঘদিনের। আমরা বারবার জায়গা বাড়ানোর দাবি করলেও কেউ শুনছেন না। বন্দরে জায়গা সঙ্কটের কারণে ওপারে পেট্রাপোল বন্দরে কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। বন্দরের আশপাশে বেসরকারিভাবে ওয়্যারহাউস ও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দর দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। পণ্যাগার, ইয়ার্ড ও জায়গার অভাবে বন্দরটি অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ধীরে ধীরে বন্দরটি ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এই বন্দরকে আরো গতিশীল করতে প্রথমেই জায়গা সঙ্কট দূর করতে হবে। জায়গা সঙ্কটের কারণে অনেক পণ্য রাখা যাচ্ছে না।

বেনাপোল বন্দরকে বাণিজ্যের উপযোগী করে তুলতে এর ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণ করতে হবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। বাড়াতে হবে পণ্য উঠানামার যন্ত্রপাতি। সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে বন্দরটি শিগগিরই অচল হয়ে পড়বে। বেনাপোল কাস্টম কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, বন্দর থেকে পণ্যচালান খালাসের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্কতার সঙ্গে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দ্রুত পণ্যচালান খালাসের জন্য সবসময়ের জন্য প্রস্তুত আছি। অমদানি রপ্তানি ও রাজস্ব আয় বাড়াতে জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন