হোম আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: চীনে এবার অংশ নিল ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চীনের শিক্ষার্থীদের জীবনের সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার নাম ‘গাওকাও’। এই পরীক্ষা ‘বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা’ বা ‘সব পরীক্ষার মা’ হিসেবেও পরিচিত। এটা মূলত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। ১২ বছরের পড়াশোনা শেষে উচ্চবিদ্যালয় পাশ করা শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। চলতি বছর এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদন মতে, এ বছর জুন মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন শিক্ষার্থীরা।

‘গাওকাও’ শব্দটি দুটি শব্দের সমন্বয়ে তৈরি। এর একটি হলো ‘কলেজ’ এবং অন্যটি ‘পরীক্ষা’। চীনের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জীবনে ‘গাওকাও’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই পরীক্ষাই তাদের ভবিষ্যত ও ক্যারিয়ার নির্ধারণ করে।

‘গাওকাও’ পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের মান্দারিন, ইংরেজি ও গণিত এই তিন বিষয়ে বাধ্যতামূলক পরীক্ষা দিতে হয়। এছাড়াও পদার্থ, ইতিহাস ও রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় থেকেও প্রশ্ন করা হয় এই পরীক্ষায়।

বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের এক থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে তাদের কয়েকটি রচনা, এমসিকিউ ও শূন্যস্থান পূরণ বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।

এ পরীক্ষা মোট ৭৫০ নম্বরের । ভর্তির ক্ষেত্রে এই নম্বর বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। চীনের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিতে ৬০০-এর বেশি নম্বর দরকার হয়।

গত বছর, চীনের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ গুয়াংডং-এ মাত্র ৩ শতাংশ পরীক্ষার্থী ৬০০–এর বেশি স্কোর পেয়েছিলেন। কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না হলে এ পরীক্ষা আবার পরের বছর দেয়া যায়। ২০২১ সালে ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী আবারও গাওকাও পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এ বছর প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী ‘গাওকাও’ পরীক্ষা দেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ পরীক্ষাকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন’ পরীক্ষা বলে ঘোষণা করেছে।

১৯৫২ সালে প্রথম ‘গাওকাও’ পরীক্ষা চালু হয়। সে সময় প্রতিবছরের ১৫ থেকে ১৭ আগস্ট এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত এ পরীক্ষা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়।

১৯৭৭ সালের অক্টোবরে এ পরীক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করে আবার শুরু হয়। এরপর থেকে কোটি কোটি চীনা শিক্ষার্থীর ভাগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে ‘গাওকাও’।

গত বছর (২০২২) সালে ১ কোটি ১০ লাখ পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ২০ লাখ বেড়ে এ বছর পরীক্ষার্থী ১ কোটি ৩০ লাখ হয়েছে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আসন আছে প্রায় এক কোটি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন