স্পোর্টস ডেস্ক:
এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের মঙ্গলবারের ম্যাচটা বাঁচা-মরার। কিন্তু আফগানিস্তান নিজেদের এই ম্যাচে নিজেদের এগিয়েই রাখছে। বিশেষ করে দলটির হেড কোচ জনাথন ট্রট মনে করেন, দুই দলের লড়াইয়ে সামান্য ফেভারিট অবস্থানে আফগানিস্তানই!
সাম্প্রতিক ইতিহাসের কারণেই আফগানরা এতটা আত্মবিশ্বাসী। ম্যাচের আগের দিন আফগানিস্তানের প্রধান কোচ ট্রট বলেছেন, ‘আমি যখন থেকে দলের সঙ্গে আছি, অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত পেয়েছি। যেমন ২০২৩ সালে বাংলাদেশে গিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জেতা। ওটা আগে কখনও হয়নি। বাংলাদেশ নিজেদের ঘরের মাঠে সবসময়ই শক্তিশালী, সেখানে গিয়ে জয় পাওয়াটা আমাদের বিপুল আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।’
ট্রট যোগ করে বলেছেন, ‘তারপর ছিল সেন্ট ভিনসেন্টে ২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জয়, যা আমাদের সেমিফাইনালে তুলেছিল। সেটা ছিল টানটান এক ঐতিহাসিক ম্যাচ। এই দল কখনও নতুন কিছু করতে ভয় পায় না। বরং চ্যালেঞ্জের মুখে তারা আরও উজ্জীবিত হয়। নিজেদের জন্য নতুন মানদণ্ড তৈরি করছে, একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও পথ তৈরি করে দিচ্ছে।’
৯ সেপ্টেম্বর হংকংকে হারিয়ে এশিয়া কাপে শুভসূচনা করেছে আফগানিস্তান। এরপর তারা পেয়েছে ছয় দিনের বিরতি, যা কোচের মতে ঠিক সময়েই ঘটেছে, ‘আমি এই বিরতিতে অনেক খুশি। এখানকার প্রচণ্ড গরমে খেলা সত্যিই কষ্টকর। এই বিরতিতে আমরা নিজেদের ঝালিয়ে নিতে, শরীর ও মনকে সতেজ করতে পেরেছি। এখন সামনে আরও ম্যাচ আছে, আশা করি এই জিততে পারলে সুপার ফোরে উঠে কয়েক দিনের মধ্যেই টানা ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত থাকতে পারবো।’
এশিয়া কাপের আগে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে আফগানিস্তান খেলেছে টানা পাঁচ ম্যাচ। সেটা ছিল পাকিস্তান ও আমিরাতকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ। সেই ক্লান্তির কথা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে জানিয়েছিলেন অধিনায়ক রশিদ খান। বিশেষ করে দুবাই থেকে আবুধাবিতে প্রতিটি ম্যাচের জন্য যাওয়া–আসা তাদের চাপে ফেলেছিল। তবে ট্রট এটাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন, ‘আমাদের সূচি আসলে সুবিধাজনকও হতে পারে, যদি আমরা আবুধাবিতে ঠিকঠাক খেলতে পারি। এখানকার উইকেট দুবাই বা শারজার মতো নয়। মাটির গঠন আলাদা, তাই খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এই টুর্নামেন্টে বিভিন্ন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই হয়, আর আমি মনে করি আমাদের দলে এমন ক্রিকেটার আছে, যারা যেকোনও পরিবেশে জেতার ক্ষমতা রাখে।’
আফগানিস্তানের বিশ্বমানের স্পিন আক্রমণ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘শুধু বল ঘোরাচ্ছে বলেই যে আমরা জিতবো, তা নয়। সব বিভাগে ধারাবাহিক হতে হবে। এজন্যই আমরা এত কঠোর পরিশ্রম করি। আমাদের স্পিনাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রচুর খেলেছে, নানা ফ্র্যাঞ্চাইজিতেও খেলছে। তবে শুধু স্পিন নয়, পুরো দলকে কাজটা ভালোভাবে করতে হবে।’
ট্রট মনে করেন এশিয়া কাপ তাদের জন্য দারুণ একটি সুযোগ, ‘এশিয়া কাপ আমাদের জন্য দারুণ সুযোগ। সামনে ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপও আছে, যেখানে আমরা শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মাঠে খেলার ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তবে এখনই অনেক দূরে তাকানোর সুযোগ নেই। আমাদের মনোযোগ কেবল বাংলাদেশের বিপক্ষে।’
পরিসংখ্যান
**টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান মুখোমুখি হয়েছে ১২ বার। আফগানিস্তান জিতেছে ৭ বার, বাংলাদেশ ৫ বার।
**২০২২ সালে শারজাতে শেষ এশিয়া কাপের টি–টোয়েন্টি ম্যাচে টাইগারদের সহজে হারায় আফগানরা।
**বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস মাত্র ২৭ রান দূরে আছেন সাকিব আল হাসানকে (২,৫৫১) ছাড়িয়ে দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে।
**বাংলাদেশ–আফগানিস্তান ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন লিটন—১০ ম্যাচে ২২৭ রান, দুইটি অর্ধশতকসহ।
**আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী করেছেন ২২০ রান (স্ট্রাইক রেট ১১৮.২৭), আর সাকিব ও নবী দুজনই খেলেছেন সবগুলো ম্যাচ (১২টি)।
**উইকেট শিকারের তালিকায় এগিয়ে রশিদ খান- ১১ ম্যাচে ২২ উইকেট, ইকোনমি রেট ৫.৫২, গড় ১০.৫৪।