হোম অন্যান্যসারাদেশ পল্লী চিকিৎসক বিধান রায় বেপরোয়া তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিক নিয়ে সংবাদ প্রকাশে তোলপাড়

পল্লী চিকিৎসক বিধান রায় বেপরোয়া তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিক নিয়ে সংবাদ প্রকাশে তোলপাড়

কর্তৃক
০ মন্তব্য 123 ভিউজ

 তপন চক্রবর্তী, তালা :

গত ২৫ জুলাই দৈনকি সংকল্প-এ তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিক নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরই গাত্রদাহ শুরু হয় ক্লিনিক মালিকের। এরপর বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে সাংবাদিক তপন চক্রবর্তীকে নানা ভাবে হুমকি দেয় তার ক্যাডার বাহিনী।
অথচ পল্লি চিকিৎসক বিধানের সাথে কল রেকর্ডে পিপিই কেনার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। পরে অস্বীকার করলেও অকপটে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য একাধিক ভাবে চাঁপ সৃষ্টি করে চলেছেন। নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে সাংবাদিক তপন চক্রবর্তীকে।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি পিপিই, মাক্স ও হ্যান্ডগ্লাপ্স বে-সরকারি ক্লিনিকের নিকট বিক্রি করার অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে ২৪ জুলাই রাতে ক্লিনিক মালিক বিধান রায়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে, তিনি পিপিই, মাক্স ও হ্যান্ডগ্লাপ্স কথা স্বীকার করলেও সকালে ক্যামারার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে বিধান রায়ের দাবী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তাব্যক্তিদের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় তিনি এগুলো নিয়েছেন। তিনি এখনও ওই পিপিই, মাক্স ও হ্যান্ডগ্লাপ্স ব্যবহার করেননি। তার কাছে সুরক্ষিত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তালা উপ-শহরের মেলা বাজারে অবস্থিত সার্জিক্যাল ক্লিনিক। এই ক্লিনিক শুরু থেকে নানান অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে আতাত করে জিরো থেকে কোটি পতি বনে গেছেন তিনি। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরঞ্জাম কৌশলে নিয়ে চলে তার সার্জিক্যাল ক্লিনিক। এরপূর্বে কয়েকবার সরকারি সরঞ্জাম তার ক্লিনিকে ধরা পড়েছিলো । সিলগালাও করা হয়েছিল তার ক্লিনিক। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতাবলে আবারও চালু হয় তার ক্লিনিক। তবে ক্লিনিকে অপারেশনের জন্য অজ্ঞান করার ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও তা নেই। অন-কলে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ডেকে রোগী দেখেনো হয় ওই কিøনিকে। ফলে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে ক্লিনিক মালিক ডাক্তার বিধানের রয়েছে সু-সম্পর্ক।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারি ভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে বরাদ্দ আসে, তার অধিকাংশ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম ও ঔষধ কৌশলে চলে যায় সার্জিক্যাল ক্লিনিকে। সরকারি মালামাল ক্লিনিকে নেওয়ার অপরাধে কয়েকবার সংবাদের শিরোনামের পাশাপাশি ক্লিনিকটি ¯সিলগালাও করেছিলো প্রশাসন। তারপরও থেমে থাকেনি ক্লিনিক মালিক বিধান রায়ের অপকর্ম। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে দেনদরবার রেখে সরকারি জিনিষ নিয়ে বহালতবিয়াতে ক্লিনিক পরিচালনা করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ। এছাড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকের নিচে ঔষধের দোকানে নেই কোনো লাইসেন্স। তারপর ঔষধের দোকান চলছে বহালতবিয়াতে।

ঘটনার দিন চলতি বছরের ৪ জুলাই সকাল ১১ টার দিকে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে করোনা ভাইরাসের পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম), মাক্স ও হ্যান্ডগ্লাপ্স দেওয়া হয় বিধাণ রায়ের মালিকানাধীন সার্জিক্যাল ক্লিনিকে। বিষয়টি স্থানীয় একজন সাংবাদিক জানতে পেরে অনুসন্ধান চালান ওই ক্লিনিকে। সেখানে ওই সাংবাদিকের হাতে ধরা পড়েন ক্লিনিক মালিক বিধান রায়। এসময় বিধান রায় সাংবাদিকে টাকা দিয়ে দফারফা করেন।

বিষয়টি নিয়ে তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের মালিক বিধান রায়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি অকপটে সরকারি পিপিই নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি পিপিই আমার কাছে আছে। কিন্তু সেটি তিনি এখনও ব্যবহার করেননি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কে আপনার কাছে এগুলো দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলদের সাথে আমার সু-সম্পর্ক আছে। যেকারণে আমি জিনিষ গুলো পেয়েছি। তবে এটা নিয়ে লেখালেখি করার কি দরকার ?

তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিক্যাল কর্মকর্তা (সেকমো) অনুপ দেবনাথ নিজেই সার্জিক্যাল ক্লিলিকের কাছে ওই গুলো বিক্রি করেছেন। তার সাথে ক্লিনিক মালিক বিধানের ভালো সম্পর্ক থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনেক সরঞ্জাম তার কাছে বিক্রি করেছেন বলে আমিও শুনেছি।

তবে বিষয়টি নিয়ে অনুপ কুমার দেবনাথ বলেন, আমাদের কাছে দুই-একটি আসে স্বাস্থ্য সু-রক্ষা সরঞ্জাম। সেটা আমরা ব্যবহার করি। তবে বিক্রি করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এসময় অনুপের কাছে প্রশ্ন ? আপনি নিয়মিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঔষধ নিয়ে পাশর্বর্তী কপিলমুনি বাজারের বিভিন্ন ঔষধের দোকানে বিক্রি করেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে, তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. ফারাহ ফেরদৌস জানান, সরকারি চিকিৎসা সামগ্রী বাইরের কোনো ক্লিনিকে ব্যবহার করার নিয়ম নেই। যদি কেউ করে থাকে তাহলে অন্যায় করেছে। আমরা কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হোসাইন সাফায়াত জানান, আমি অভিযোগ শুনেছি এবং রিপোর্ট দেখেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন