জাতীয় ডেস্ক :
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি সাময়িক সময়ের জন্য। সেতুতে স্পিডগান মেশিন ও সিসি ক্যামেরা বসানোর পরই মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেয়া হবে। কবে থেকে চলাচল করবে কিংবা ঈদে চলবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার (২৮ জুন) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সব দফতর ও সংস্থার সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
নৌ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাটে এখনো ৬টি ফেরি প্রস্তুত রয়েছে। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন পরিবহনে চাহিদা অনুসারে এসব ফেরি চলাচল করবে। তবে ফেরিগুলো পরিচালনায় শিগগিরই একটি পরিকল্পনা নেয়া হবে।
এদিকে পদ্মা সেতু হলেও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে লঞ্চ চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বরং লঞ্চ মালিকরা আরও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে লঞ্চ পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা চ্যালেঞ্জ জয় করেছি। প্রধানমন্ত্রী ২৫ জুন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ স্থাপনা ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধন করেছেন। পদ্মা সেতু করতে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতুর দুর্নীতির নামে বাঙালি জাতির কপালে কলংকের তিলক দিতে চেয়েছিল। কানাডার আদালতে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রীদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। যা এখন বাস্তব। পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এর অধিনস্থ ১১টি দফতর/সংস্থার ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিপত্র (এপিএ) সই হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এবং দফতর/সংস্থা প্রধানরা নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিপত্রে সই করেন।
১১টি দফতর/সংস্থা হলো- বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি), নৌপরিবহন অধিদফতর, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ (বাস্থবক), চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক), মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (মোবক), পায়রা বন্দরকর্তৃপক্ষ (পাবক), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (এনএমআই) ও নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতর।
চবক’র চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, পাবক’র চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, বাস্থবক’র চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান আহমদ শামীম আল রাজী, বিআইডব্লিউটিএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আবদুছ ছাত্তার শেখ, নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, মোবক’র সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার, বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এস এম মনিরুজ্জামান, মেরিন একাডেমির কমান্ডেন্ট সাজিদ হোসেন, এনএমআইর অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন আতাউর রহমান এবং নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতরের পরিচালক সুমন বড়ুয়া এপিএতে সই করেন।
প্রতিমন্ত্রী পরে চারজনের মাঝে ২০২১-২০২২ সালের শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করেন।
