নড়াইল অফিস :
দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত এডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাসকে নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যার পর জানা যায়,স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, জেলা পরিষদ আইন, ২০০০ এর ১০ নং ধারার (১)(গ) উপ-ধারাতে উল্লেখ রয়েছে, চেয়ারম্যান বা কোনো সদস্য তার নিজ পদ থেকে অপসারণযোগ্য হবেন, যদি তিনি দুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্থলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে আদালত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত হন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, জেলা পরিষদ আইন, ২০০০ এর ১০ নং ধারার (১)(গ) উপ-ধারা অনুযায়ী সোহরাব হোসেনকে নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হলো।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুনীর্তির মামলায় নড়াইল পৌর সভার সাবেক মেয়র বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ ১১জনকে ৫ বছর করে কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দূর্নীতি দমন কমিশনের পিপি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম , সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামীরা হলেন, কাউন্সিলর খন্দকার আল মনসুর বিল্লাাহ, সাবেক কাউন্সিলর আহম্মদ আলী খান, সাবেক কাউন্সিলর তেলায়েত হোসেন, ইজারাদার রফিকুল ইসলাম, ইজারাদার রাধে কুন্ডু, ইজাজুল হাসান বাবু, ইজারাদার জিলুর রহমান, ইজারাদার এইচএম সোহেল রানা, তৎকালিন পৌর সচিব শফিকুল আলম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী ওয়াজিহুর রহমান।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে হাট বাজার ইজারা দেয় ১৪১২(বাংলা) সালে। আসামিরা নড়াইল পৌরসভার রূপগঞ্জ সাধারণ হাট ও নড়াইল বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে ৭ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকা ও ১৪১১ সালে একই হাট ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা আদায় করে। সর্বমোট ১২ লাখ ২২শ ৮০ টাকা পৌরসভায় জমা না দিয়ে তারা আত্মসাৎ করে।
এব্যাপারে দূর্ণীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কারী কর্মকর্তা সহকারি পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী পৌর মেয়র, কাউন্সিলর, ইঞ্জিনিয়ার সচিবসহ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
পরবর্তিতে মামলাটি বিচারের জন্য স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এই মামলায় সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধ অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন। অনাদায়ে ৬ মাস করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। একইসাথে আত্মসাৎকৃত ১২ লাখ ২২শ ৮০ টাকার মধ্যে আসামী জিলুর রহমান ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬০ টাকা, সোহেল রানা ৩ লাখ ৫২ হাজার ১শ ২০ টাকা, রাধেকুন্ডু ৩ লাখ ৫০ হাজার, রকিবুল ইসলাম ১ লাখ ৮৫ হাজার, ইজাজুল হাসান ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯শ টাকা পরিশোধ করবে বলে রায়ে উল্লেখ্য করা হয়।
