হোম অন্যান্যসারাদেশ নড়াইলের কালিয়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে প্রচারণায় মোটরসাইকেল মহড়ার হিড়িক

মোস্তফা কামাল, নড়াইল :

ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকেরা মোটরসাইকেলের মহড়া বের করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসি,প্রত্যক্ষদর্শী ও জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে জানা গেছে,বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরাই আরচণবিধি ভাংছেন। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন পদপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। প্রার্থীরা দাবি করেছেন নাশকতা সৃষ্টিকারীদের প্রতিরোধ করতে গণসংযোগকালে তাঁরা সমর্থকদের সঙ্গে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

জেলা নির্বাচন সূত্রে জানা গেছে,তৃত্বীয় ধাপে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২৮ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সংখ্যা ৪০ জন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালার যানবাহন ব্যবহার সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ ১৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে কোন ট্রাক,বাস,মোটরসাইকেল,নৌযান,ট্রেন কিংবা অন্য কোন যান্ত্রিক যানবাহন সহকারে মিছিল বা মশাল মিছিল বা অন্য কোনো প্রকারের মিছিল বাহির করিতে পারিবে না কিংবা কোনরূপ শোডাউন করিতে পারিবে না।

এলাকাবাসি জানায়,কালিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নেই প্রতিদিন বিকেলে কোন না কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ২০০ সমর্থক নিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করছেন। এতে সাধারণ ভোটাররা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হুমকী-ধামকিসহ মারধর করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যারা অভিযোগ করেছেন :

মাউলি ইউনিয়নের নৌকা প্রার্থী রোজী হক বলেন,আজ রোববার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.ফিরোজ খান প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল,১৫০টি ভ্যানগাড়ী,ইজিবাইক,নসিমন-করিমন নিয়ে ইউনিয়নে মহড়া দেন। তিনি দাবি করেন.এতে সাধারণ ভোটাররা ভীত হয়ে পড়েছেন।

বড়নাল ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মল্লিক মো.মনিরুল ইসলাম বলেন,ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী ফিরোজ মল্লিকের নেতৃত্বে শুক্রবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে প্রায় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন।

খাশিয়াল ইউনিয়নের চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বরকত উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমার ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা প্রতিদিন ৭০/৮০টি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে। এতে সাধারণ ভোটাররা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন। তিনি আরো বলেন,শুক্রবার বিকেলে নৌকা প্রার্থীর সমর্থক মেহেদীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল নিয়ে চোরখালি গ্রামে প্রবেশ করে আমার সমর্থক ইরহাদ বিশ্বাস,সাঈদ বিশ্বাস,শিমুল বিশ্বাস,মিল্লাত মোল্লাসহ ১০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় ঠেকাতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার মোল্লা আহত হন। তিনি বলেন,বিষয়টি নড়াগাতি থানা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

জানতে চাইলে মাউলি ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজ খান বলেন,ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে আসছি। পড়ন্ত বয়সে এসে এখনো সেই আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। আমার পরিবারসহ বংশ পরম্পরায় সেই আদর্শের রাজনীতি করে আসছি। দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেয়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে জনগণ বড়। এলাকার মানুষের অনুরোধ আমি ফেলতে পারিনি। যে কারণে আমাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হচ্ছে।

বড়নাল ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের নৌকা প্রার্থী ফিরোজ মল্লিক বলেন,আমার পক্ষে কেউ মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে শোভাযাত্রা করেনি। এ ধরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

জানতে চাইলে কালিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আরিফুল ইসলাম বলেন,নির্বাচন, আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে উভয় প্রার্থীর সমর্থকেরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলে উপজেলা এবং জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করার কথা। তিনি বলেন,এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন