হোম আন্তর্জাতিক নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ইস্যুতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে সেনাবাহিনী

নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ইস্যুতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে সেনাবাহিনী

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 59 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নেপালে সহিংস বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর অন্তবর্তীকালীন নেতৃত্ব নিয়োগে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। এই জটিলতা নিরসনে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আবারও ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এক সেনা মুখপাত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

সম্ভাব্য অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে বিক্ষোভকারীদের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছেন নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। ২০১৬ সালে দেশটির প্রথম নারী হিসেবে তিনি ওই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

বিক্ষোভের এক সমর্থক ৩৪ বছর বয়সী সুজিত কুমার ঝা বলেন, আমরা সুশীলা কার্কিকে তার প্রকৃত রূপেই দেখি—সৎ, নির্ভীক এবং অবিচল। এই দায়িত্বের জন্য তিনিই সঠিক মানুষ।

পুরো বিষয়ে অবগত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির দাবি, অন্তর্বর্তী নেতা হওয়ার ব্যাপারে কার্কি সম্মতি দিয়েছেন। তবে সংবিধান সম্মত উপায়ে তার নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এদিকে, তার নিয়োগ নিয়ে বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে দাবি করে আরেক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেতা নির্ধারণ করতে চাইছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রয়টার্স ফোনে যোগাযোগ করলেও কার্কি সাড়া দেননি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজা রাম বাসনেত বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন নেতৃত্ব নির্ধারণে প্রাথমিকভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং আজ সারাদিন তা অব্যাহত থাকবে। আমরা ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।

দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরেই নেপালে আন্দোলন চলছিল। এরমধ্যে ভুয়া খবর ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি নিষেধাজ্ঞা আরোপের সঙ্গে সঙ্গে যেন বিস্ফোরণ ঘটে। পরে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি সরকার। আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় ২০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানির পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ জনে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছেন এক হাজার ৩৩ জন।

এই আন্দোলনকে ‘জেন জি বিক্ষোভ’ বলে তকমা দিয়েছে সংবাদমাধ্যম। কারণ এতে অংশ নেওয়া বেশিরভাগই তরুণ যারা দুর্নীতি দমনে সরকারের ব্যর্থতা এবং কর্মসংস্থানের অভাবে হতাশ।

তবে বিক্ষোভের মধ্যে দেখা যায় সহিংসতা। সর্বোচ্চ আদালত থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের বাড়িঘর এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির ব্যক্তিগত বাসভবন পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা পুড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি প্রশমিত হয় কেবল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর।

এছাড়া পোখরার পর্যটন শহরের একাধিক হোটেল এবং কাঠমান্ডুর হিলটন হোটেলসহ বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

নেপালে কয়েক দশকের মধ্যে ঘটে যাওয়া ভয়াবহতম বিক্ষোভের পর আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে মাঠে নেমেছে দেশটির সেনাবাহিনী। আপাতত সেনা টহলের কারণে রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তা অনেকটা জনশূন্য হয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অধিকাংশ দোকানপাট এখনও বন্ধ রয়েছে। তবে চালু হয়েছে কয়েকটি জরুরি পরিষেবা।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কাঠমান্ডু এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় বিধিনিষেধ জারি থাকবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন