নিউজ ডেস্ক:
বিগত সময়ের নির্বাচন নিয়ে নানান সমালোচনার কথা তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচনের একটি ‘নতুন মানদণ্ড’ তৈরি করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অতীতের নির্বাচনগুলো আমরা সবাই দেখেছি। কেউ প্রহসনের নির্বাচন বলে, কেউ বলে প্রতারণা আর তামাশার নির্বাচন। সেখান থেকে বেরিয়ে অনেক উপরে উঠে আমাদের একটি নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে হবে।
সেই পরিবর্তন নিয়ে আসাই পুলিশ বাহিনীর বড় দায়িত্ব, বলেন তিনি।
আগামী নির্বাচন সকলের জন্য একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব তুলে ধরে এই দায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে ভূমিকা রাখতে জেলা পুলিশ সুপারদের প্রতি আহ্বান রাখেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তার মতে, এবারের নির্বাচন কোনো সাধারণ নির্বাচন নয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই নির্বাচন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে সেই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। একই দিনে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারে গণভোটও হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি গুছিয়ে আনতে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে কমিশন বলেছেন, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল দেওয়া হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের সময় একই সাথে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে, যা আগামীর বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। গণভোটের মধ্য দিয়ে আমরা যে নতুন ভিত্তি পাবো সেটা শতবর্ষ ধরে এই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
নির্বাচনে বিদেশ থেকে অনেক প্রতিনিধিদল, নির্বাচন পর্যবেক্ষক আসবেন তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা যেন এই নির্বাচনকে একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারেন, সেই লক্ষ্যে পুলিশ সুপারদের কাজ করে যেতে হবে।
আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও সুন্দর করার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের উদ্যোগী ও সৃজনশীল হওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সব কথা তো কাগজে লিখে দেওয়া যায় না। দায়িত্ব পালনের সময় আপনারা চিন্তা করবেন, কীভাবে কাজটি আরও সুন্দরভাবে করা যায়।’
পুলিশ সদস্যদের কাজের মান উন্নত করতে ও কাজে আনন্দ বাড়াতে জেলা বা বিভাগীয় পর্যায়ে সদস্যদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা যায় বলেও তিনি পরামর্শ দেন।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বকস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও আইজিপি বাহারুল আলম।
