শিক্ষা ডেস্ক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্যকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে ঢাবির মেডিকেল সেন্টারের সামনে আন্দোলনকারীদের মারধরের শিকার হন ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আব্দুল মুহিত।
পরে তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সূত্র জানায়, দুপুরে ঢাবি ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা লাঠি-সোঁটা ফেলে শান্তিপূর্ণভাবে হলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন প্রক্টরিয়াল বডির শিক্ষকরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা সোমবার ছাত্রলীগের হামলার সময় তারা কোথায় ছিলেন বলে প্রশ্ন তোলেন। অভিযোগ উঠেছে- বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক ডা. আব্দুল মুহিতকে মারধর করেন। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির অন্য সদস্যরা এগিয়ে গেলে তাদেরও লাঞ্ছিত করা হয়।
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঁচ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রক্টরিয়াল টিম।
এদিকে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল কমিটির এক জরুরি সভা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে–
(১) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে না। আর শিক্ষার্থীদের বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
(২) ক্যাম্পাসে সন্দেহজনক কাউকে চিহ্নিত করা গেলে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
(৩) শিক্ষার্থীদের সমাবেশে কোনো ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, যেমন- লাঠিসোঁটা, ইট, আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি বহন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
(৪) সবাইকে নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং কেউ নাশকতামূলক কাজে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(৫) চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যেকোনো গুজব ছড়ানো এবং উসকানিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং প্রক্টরিয়াল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।