হোম অন্যান্যস্বাস্থ্য ডেঙ্গুতে সাতদিনের ব্যবধানে হারালেন দুই সন্তান

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

দেশে মহামারির আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। সেই মহামারিতে মাত্র সাতদিনের ব্যবধানে মৃত্যু হয়েছে দুই ভাই-বোনের। দুই সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও মা রাবেয়া আক্তার।

গত ১৬ আগস্ট প্রথমে ৯ বছরের ছেলে আরাফাত জাহান রাউফের ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর থেকে দ্রুত প্লাটিলেট কমতে থাকে। এরপর হাসপাতালে নিলে মারা যায় সে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর অসুস্থ হয়ে পড়ে বোন ইসনাত জাহান রাইদা। জ্বর আসার পরেই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। কিন্তু বাবা-মার শেষ সম্বল রাইদাও না ফেরার দেশে চলে যায়।

দুই সন্তানের আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না বাবা-মা। সাজানো গোছানো সংসারজুড়ে শুধু সন্তানদের স্মৃতি। তাই রাজধানীর মিরপুরের মধ্য পাইকপাড়ার বাসা ছেড়েছেন তারা।

রাজধানীর আইকন একাডেমি নামে একটি স্কুলে রাউফ কেজি আর রাইদা নার্সারিতে পড়ত। শ্রেণি শিক্ষকদেরও চোখের মণি ছিলো দুই- ভাইবোন। স্কুলের দুই শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুতে শিক্ষকরাও শোকাহত।

স্কুলের শিক্ষকরা বলেন, ‘রাউফ ও রাইদার কথা কিছুতেই ভুলতেই পারছিনা। সারাক্ষণ চোখের সামনে ওদের চেহারাটা ভাসে। বাচ্চা দুইটা খুবই ভদ্র এবং শান্ত ছিল। ক্লাসে বিরক্ত করতো না।’

এদিকে ডেঙ্গুতে জ্বর ছেড়ে গেলেও মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন আক্রান্তরা। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, একাধিক স্ট্রেইন দ্বারা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে জটিলতাটা বেশি হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এটা শুধু বয়স্ক মানুষ, যাদের আগে থেকেই রোগ আছে তাদের হচ্ছে এমনটা না। ইয়াং মানুষ যাদের অন্য রোগ নেই তাদেরও হচ্ছে। এতে আমার ধারনা, একধিক স্ট্রেইন দ্বারা যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের মধ্যে জটিলতাটা বেশি হচ্ছে।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু আর আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে চলতি আগস্ট মাসে। এ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৪২ জন। আর চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেছে ৫৯৩ জন।

ডেঙ্গু থেকে সহসাই মুক্তি মিলছে না জানিয়ে বে-নজির আহমেদ বলেন, জনসচেতনতায় সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন