হোম আন্তর্জাতিক জনমত পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালীদের ডলার দিচ্ছে ইসরায়েল

জনমত পরিবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালীদের ডলার দিচ্ছে ইসরায়েল

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 65 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর দুই বছর ধরে চলা গণহত্যা যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসরায়েলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এ অবস্থায় ‘প্রচারণা যুদ্ধে’ জয়ী হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালীদের লাখ লাখ ডলার দিচ্ছে ইসরায়েল।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফ্ট’কে উদ্ধৃত করে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে মিডল ইস্ট আই এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন বিচার বিভাগে দাখিল করা ফরেন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট রেকর্ড থেকে দেখা যায়, ইসরায়েল সরকার জুনের মাঝামাঝি থেকে চলতি বছরের নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত প্রভাবশালীদের অর্থ প্রদানের জন্য ৯ লাখ ডলার বরাদ্দ করেছে।

ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রভাবশালীদের প্রভাবিত করার জন্য ‘ব্রিজেস পার্টনার্স এলএলসি’ নামে একটি কোম্পানিকে এই অর্থ প্রদান করে। জার্মানির হাভাস মিডিয়া গ্রুপের মাধ্যমে ‘ব্রিজ পার্টনার্স এলএলসি’তে অর্থগুলো স্থানান্তর করা হয়।

ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ব্রিজ পার্টনার্স এলএলসি তাদের প্রকাশিত এক ফর্মে বলেছে, তাদের উদ্দেশ্য হলো ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান প্রচারে সহায়তা করা।’

ফর্মটিতে আরও জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিকে ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, এক্স, ইউটিউব এবং থ্রেডসের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০টি ইসরায়েলপন্থী পোস্ট করার জন্য ১৪-১৮ জন প্রভাবশালী নিয়োগের জন্য এই অর্থগুলো দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিটি পোস্ট সম্ভাব্যভাবে ৬ হাজার পর্যন্ত আয় করতে পারে। কিছু পোস্টের জন্য ৭ হাজারেরও বেশি ডলার দেওয়া হতে পারে।

কয়েকদিন আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিউ ইয়র্ক সিটিতে একদল প্রভাবশালীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। নেতানিয়াহু তাদের বলেছিলেন, ইসরায়েলের প্রতি ক্রমহ্রাসমান সমর্থন মোকাবেলার উপায় হলো, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভাবশালীদের ব্যবহার করা।

নেতানিয়াহু জানান, এটি ইসরায়েলি মিডিয়া কৌশল। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তথাকথিত ইহুদি-বিদ্বেষ মোকাবেলায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন প্রচারণা ব্যবস্থাপক ব্র্যাড পার্স্কেলের সঙ্গে ১.৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে।

‘তথ্য যুদ্ধে’ জয়লাভ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইসরায়েলি সরকারক তাদের জনগণের কাছে সমালোচনার মুখে পড়েছে। আগস্ট মাসে প্রাক্তন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা শুরু করেন এবং ইসরায়েলকে ‘একটি কুষ্ঠরোগী রাষ্ট্রে’ পরিণত করার অভিযোগ তোলেন। তিনি দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাজ করবে – এমন একটি সুসংগত ‘প্রচার সদর দপ্তর’ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সুপারিশ করেছিলেন।

তিনি আরও সুপারিশ করেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সর্বত্র তার ‘বন্ধুদের ব্যবহার’ করা’, যাতে তারা তাদের কাছে ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গি ক্রমাগতভাবে পৌঁছে দিতে পারে।

জনসমর্থন কমে যাওয়া

জরিপে ধারাবাহিকভাবে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলের প্রতি পশ্চিমা জনসমর্থন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। গত শুক্রবার প্রকাশিত একটি নতুন জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাটদের ৬৫ শতাংশ ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে। ৭২ শতাংশ বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, ৬২ শতাংশ ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং সৈন্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার পক্ষে সমর্থন করেছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন