হোম এক্সক্লুসিভ করোনা সংক্রমণের কারণে মাগুরায় মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত ৪০ পরিবার বিপাকে

করোনা সংক্রমণের কারণে মাগুরায় মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত ৪০ পরিবার বিপাকে

কর্তৃক
০ মন্তব্য 103 ভিউজ

মাগুরা প্রতিনিধি :

করোনা সংক্রমণের কারণে মাগুরা সদরের বরই পালপাড়ায় মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত ৪০ পরিবার বিপাকে পড়েছে । এ পেশার সাথে জড়িত কুমোরেরা এখন অলস সময় পার করছেন । নেই কোনো ব্যস্ততা, কাজের প্রতি নেই কোনো আগ্রহ । প্রতি বছর নববর্ষ ,বৈশাখী মেলা ,পূজা উৎসব ও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে । কিন্তু এবার হয়নি মেলা ,হয়নি পূজা উৎসব । করোনা সব তছনছ করে দিয়েছে । মৃৎশিল্পীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে ।

মাগুরা সদরের বরই পালপাড়া ঘুরে সরজমিন দেখা গেছে , মৃৎশিল্পীদের নেই ব্যস্ততা । কাজ না থাকায় অনেকে বেকার অবস্থায় বসে আছে । করোনার জেরে বিপর্যস্থ হয়েছে গোটা জনজীবন । পাল পাড়ার কুমোরেরা অলস হয়ে বসে আছে ।

বাইরে থেকে মহাজনরা পাল পাড়ায় এসে জিনিসপত্রের বায়না দিয়ে যায় । কিন্তু এবার মহামারি করোনার কারণে বাইরে থেকে পাইকারি ব্যাপারীরাও আসতে পারছে না । পালপাড়ায় প্রতি পরিবারে পোড়া মাটির তৈরি নানা ধরনের জিনিসপত্র অলস অবস্থায় পড়ে আছে । মাটির জিনিসপত্র বিক্রি না হওয়াতে পালেরা নতুন করে আর কোনো মাটির তৈরি জিনিসপত্র বানাচ্ছে না ।

মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত পালপাড়ার আনন্দ পাল বলেন,আমি অনেক বছর ধরে এ শিল্পের সাথে জড়িত । নানা উৎসবকে ঘিরে টিকে রয়েছে মৃৎশিল্পীরা । পহেলা বৈশাখ,নববর্ষ,পূজা-পার্বনকে ঘিরে পাল পাড়া মুখরিত থাকে । কিন্তু করোনা মহামারিতে মৃৎশিল্পীরা রয়েছে বিপাকে । করোনা শুরু হওয়ার পর থেকেই আমাদের বেচা-বিক্রি কমে গেছে ।

মাটির তৈরি অনেক জিনিসপত্র আমাদের ঘরেই পড়ে আছে । তাই নতুন করে আর কোনো জিনিসপত্র আমরা তৈরি করছি না । তৈরিকৃত চাঁড়ি,ঢাকুন,মালসা,কয়েল দানিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিজ দোকানেও তেমন বিক্রি হচ্ছে না । তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে ।

পাল পাড়ার অপূর্ব পাল,অতুল পালসহ অনেকে জানান, জন্মসূত্র ধরে আমরা এ ব্যবসা করে আসছি । নানা বাধা-বিপত্তি,রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে আমরা জিনিসপত্র বানাই । এটেল মাটি কিনে এনে আমাদের তৈজসপত্র বানাতে হয় । সাথে বালিও লাগে । করোনার আগে কিছু জিনিসপত্র বানিয়েছিলাম । সেগুলো পোড়ানোও হয়েছে । কিন্তু বিক্রি না হওয়াতে বিপাকে আছি । আমাদের পাল পাড়া এসে পাইকেরী মহাজনরা মাল কিনে নিয়ে যায় । কিন্তু করোনার কারণে তারা এবার আসছে না ।ভাইরাসের কারণে জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে ।

এই অবস্থায় জীবন নিয়েই মানুষ আতঙ্কে রয়েছে বাসন-কোসন কিনবে কে? তাছাড়া পহেলা বৈশাখ মেলাও এবার হয়নি । ফলে আর্থিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়েছি আমরা । শহরে আমাদের নিজ দোকানেও বেচা-বিক্রি কম থাকায় সংসার চলছে না । সরকার বা অন্য কোনো সংস্থা থেকে এখনো পর্যন্ত আমরা কোনো সাহায্য সহযোগিতা পায়নি । পায়নি কোন অনুদান ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন