হোম জাতীয় করোনাকালের মে দিবস অস্তিত্ব সংকটে দিনচুক্তির শ্রমিক

করোনাকালের মে দিবস অস্তিত্ব সংকটে দিনচুক্তির শ্রমিক

কর্তৃক
০ মন্তব্য 93 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
সায়েদাবাদে মালামাল টানার শ্রমিক জাকির মিয়া এক ঝুড়ি ফল নিয়ে ফুটপাতে বসেছেন। পাশে ১০ বছরের সন্তান। ছেলেকে মাস্ক পরিয়ে বসিয়ে রেখেছেন। তার কাজ পুলিশ আসছে কিনা দেখা। পুলিশের গাড়ি দেখলেই ঝুড়িটি নিয়ে পাশের গেটে ঢুকে পড়বেন। গত ১৫ দিন ধরে এটা তার কাজের অংশ। করোনার জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা ও বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ জারির পরে প্রথম কয়দিন তিনি বের হননি বাড়ি থেকে। পুলিশেরও কড়া পাহারা ছিল সেই সময়ে। এরপর ১৫ দিন যাওয়ার পরে টাকা ধার করে নেমে গেছেন ফুটপাতে, ভিন্ন পদ্ধতিতে নেমেছেন পাড়ার মধ্যে ঝুড়িতে ফলের ব্যবসা নিয়ে। জাকির মিয়া বলেন, ‘কিছু ত্রাণ পাইনি তা কই না। কিন্তু সারাদিন কি ডাইল দিয়া ভাত খামু নাকি? পোলা মাইয়ার মুখে কিসু দিতাম না?’
ইমারত নির্মাণ শ্রমিক কবির। শেষ কাজ করেছেন ২৭ মার্চ। যে বাসার কাজ করছিলেন তারা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় মাথায় হাত পড়ে তার। এক সপ্তাহের মজুরির টাকা হাতে ছিল, কিন্তু তারপর? কবির বলেন, বউ গর্ভবতী। দ্বিতীয় সন্তানের মুখ দেখার অপেক্ষায় সামনে আরও এক মাস। শেষের এই দুই মাস বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। সেসব ডাক্তার আপা বলে দিয়েছিলেন, কিন্তু এই এক মাসে আসলে তেমন কিছুই বাড়তি সে খেতে পায়নি।

মাল টানা শ্রমিক, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক কিংবা যেকোনও দিনমজুরের জন্য আবারও এসেছে মে দিবস, মজুরি ও শ্রমঘণ্টার অধিকারের কথা বলার দিন। কিন্তু এবার পকেটে টাকা নেই, হাতে কাজ নেই, কবে আসবে তাও জানেন না তারা। এমনকি তাদের যে সংগঠনগুলো আছে তারা বলতে পারছেন না, কবে লকডাউন শেষ হবে। কবে দিনচুক্তির শ্রমিকরা আবার কাজে ফিরে দুশ্চিন্তা মুক্ত হবেন। কিন্তু আদৌ দুশ্চিন্তামু্ক্ত হবেন তো? কেননা, আছে কাজ না থাকার ভয়। নির্মাণ শ্রমিক কবির বলেন, কাজ আসলে কে করাবে? তার হাতেও তো টাকা থাকা লাগবে। মানুষ এই দেড় মাসে বুঝে গেছে সে কত অসহায়।
১ তারিখ মে দিবস তথা শ্রমিক দিবস জানেন কিনা প্রশ্নে কবির বলেন, পেটে ভাত নাই, শ্রমিক দিবস। আগেও কোনোদিন পালন করা হয়নি। এদিন কাজ বন্ধ থাকে সবসময় এমনও না। আমাদের অনেক সংগঠন আছে, কিন্তু কোনটার সঙ্গে যুক্ত হবো বুঝতে না পেরে কোনোটাতেই নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন