হোম অর্থ ও বাণিজ্য একসময়ের নায়ক, পরে ভিলেন, এবার বিদায়!

বাণিজ্য ডেস্ক:

লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রিয়াদ সালামেহ পদত্যাগ করেছেন। মূলত আর্থিক অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চাকরি খুইয়েছেন একসময়ের জনপ্রিয় এ গভর্নর।

রিয়াদ সালামেহ, লেবাননের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর। তিন দশক গভর্নরের দায়িত্ব পালন শেষে গত মাসের ৩১ জুলাই চাকরি হারিয়েছেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত তার বদলে স্থায়ীভাবে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ ছাড়া সালামেহর মেয়াদ বাড়াতে আগ্রহী নন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি।

মূলত বড় ধরনের আর্থিক অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চাকরিচ্যুত হন সালামেহ। পাশাপাশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

লেবাননে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রার মান কমার পেছনে সালামেহ দায়ী বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। দেশটিতে চলমান আর্থিক সংকট শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। সে সময় লেবাননের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আমানত কমতে থাকে। ফলে পুরোনো দায় মেটাতে গিয়ে নতুন অর্থের সংকট সৃষ্টি হয়।

এর পরও রিয়াদ সালামেহকে সরানোর সাহস দেখায়নি কেউ। কারণ, লেবাননের রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমের অভিজাত ব্যক্তি থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মতো দেশের পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গেও সখ্য গড়ে তোলেন তিনি। এ ছাড়া মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ থেকে শুরু করে নীতির সব ক্ষেত্রেই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন সালামেহ।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের পাশাপাশি লেবাননের প্রেসিডেন্টের পদও এখন শূন্য। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের পদও খালি রয়েছে। দেশটি ধসে পড়লেও দায়িত্ব নেই কারো হাতে।

তবে চাকরিচ্যুত হলেও আরামে অবসর জীবনযাপনের সুযোগ নেই সালামেহের। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি ও লুক্সেমবার্গ ও সুইজারল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৩৩ কোটি ডলার লোপাট করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

তদন্তকারীদের দাবি, লোপাট করা অর্থের একটি অংশ তার ভাইয়ের সুইস ব্যাংক হিসাবে জমা পড়েছে। আর বাকি অর্থ দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সম্পদ কেনা হয়েছে।

এ ছাড়া শুনানিতে হাজির না হওয়ায় চলতি বছরের মার্চে ফরাসি আদালত সালামেহর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে নোটিশ জারি করেছে জার্মানিও।

পর্যবেক্ষকদের মতে, লেবাননের বিচার বিভাগ রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। তাই সালামেহর বিচার না-ও হতে পারে।

এর আগে লেবাননের গৃহযুদ্ধের পর দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী রফিক হারারি ১৯৯৩ সালে সালামেহকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর প্রাথমিকভাবে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা তৈরি করে প্রশংসা অর্জন করেন সালামেহ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন