জাতীয় ডেস্ক:
চাঁদপুরে আওয়ামী লীগ কর্মী মোবারক হোসেন বাবুকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৮ জুন) সকালে মতলব উত্তরে নিজ বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় আরও ছয়জনকে আটক করা হয়।
কাজী মিজানুর রহমান মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তার বাড়ি একই এলাকায়।
এর আগে শনিবার (১৭ জুন) গুলিতে আওয়ামী লীগ কর্মী মোবারক হোসেন বাবু হত্যার ঘটনায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেন তার ছোট ভাই আমির হোসেন কালু।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়।
তিনি জানান, আটক কাজী মিজানুর রহমান মামলার প্রধান আসামি। এরই মধ্যে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। এ ছাড়া মামলার অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, মতলব উত্তরের ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি কাজী মিজানকে মোহনপুরের বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত তাকেসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারনামীয় তিনজন; বাকি চারজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার আগের দিন রাতে হত্যাকারীদের সঙ্গে মিটিং করেছেন কাজী মিজান এবং পরদিন তার পরিকল্পনায় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
জানা গেছে, শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড় বাহাদুরপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ কর্মী মোবারক হোসেন বাবুকে (৪৮) গুলি করে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় তার ছেলে ইমরান (১৮) ও জসিম উদ্দিন (৩০) এবং অন্য একজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিএনপির সমাবেশ থেকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে মোহনপুর ইউনিয়নের মাথাভাঙা হাইস্কুল মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
ওই সমাবেশে যোগ দিতে মিছিল নিয়ে আসার পথে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন মোবারক হোসেন বাবুসহ বেশ কয়েকজন। এ সময় মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানের ভগ্নীপতি রাজ্জাক প্রধানিয়ার বাহাদুরপুর গ্রামের বাড়ি থেকে পূর্ববিরোধের জের ধরে মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালানো। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান বাবু।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান।
পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগে মোবাইল ফোনে তিনি দাবি করেন, এলাকার চেয়ারম্যান হয়ে কেন একজন মানুষকে তিনি হত্যা করবেন। এ ঘটনায় তার এবং অন্য ভাইদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।