নড়াইল অফিস:
১০ ডিসেম্বর, নড়াইল হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিন নড়াইল রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে এক সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে নড়াইল শত্রু মুক্ত করা হয়।
জানা গেছে, নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত তৎকালিন ওয়াপদা ডাক বাংলায়(বর্তমান পানি উন্নয়ন বোর্ড) পাকিস্তানি মিলিশিয়া ও রাজাকার বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্যাম্প ছিল। ৮ ডিসেম্বর নড়াইল মহকুমার লোহাগড়া থানা শত্রু মুক্ত হয় এবং কালিয়া থানাও মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। ৭ ডিসেম্বর রাজাকারদের কুট কৌশলে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র ও মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রাজাকারদের হাতে নিহত হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা ৯ তারিখ দুপুরে রূপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থানরত পাকিস্তানি রিজার্ভ ফোর্স, পুলিশ ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে আক্রমন শুরু করে। কয়েক ঘন্টাব্যাপি চলা এ যুদ্ধে পাক বাহিনী ও রাজাকাররা পরাস্থ হলেও সদরের বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা আরও সংগঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর ভোর ৪টা থেকে রূপগঞ্জ জামে মসজিদ এলাকা,বর্তমান উৎসব কমিউনিটি সেন্টার এলাকা এবং মালেক মোল্লার দোতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ৩টি গ্রুপ তিন দিক দিয়ে রূপগঞ্জ ওয়াপদায় পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনীর ওপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। দু’পক্ষের মধ্যে টানা ৭ঘন্টা ব্যাপক গুলি বিনিময় চলার পর বেলা ১১টার দিকে পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনী আত্মসমর্পন করে। এ সময় পাক অধিনায়ক বেলুচ কালা খান ২২ পাক সেনা ৪৫ জন রাজাকার নানা ধরনের অস্ত্রসহ মক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। শত্রুমুক্ত হয় নড়াইল।
নড়াইল মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন,মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল,চিত্রা থিয়েটার ব্যাপক কর্মষূচী গ্রহন করেছে। মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে রবিবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন,বধ্যভূমিও গনকবরে শ্রদ্ধা নিবেদন,বঙ্গবন্ধুর দুটি মূর্যালে পুস্পস্তবক অর্পন,আলোচনাসভা,র্যালী, এনভারনমেন্টাল থিয়েটার এর মাধ্যমে দৃশায়ন করা হবে। এছাড়া সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন,রচনা প্রতিযোগিতা জারী গানের আয়োজন রয়েছে।