হোম অর্থ ও বাণিজ্য সিলেটের ‘আনারস বাগান’ পর্যটনের নতুন কেন্দ্র

বাণিজ্য ডেস্ক :

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ নিদর্শন সিলেট। সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় গড়ে উঠেছে উঁচু-নিচু টিলার বুক চিরে সারি সারি সাজানো-গোছানো আনারস বাগান। যেনো কোনো শিল্পীর দৃশ্যপটে আঁকা নিপুণ শিল্পকর্ম। এ কৃষি খামার স্বল্প সময়ে বিশাল পর্যটন কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই এতে ছুটে আসছেন শত শত ভ্রমণপিপাসু।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সিলেটের গোলাপগঞ্জ ঘুরে দেখা মিললো উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ দত্তরাইল গ্রামের চাঁন মিয়ার আনারস বাগানের নান্দনিক সৌন্দর্য।

এক পাহাড় শেষ না হতেই, আরেক পাহাড় শুরু, সাতটি টিলা ও পাহাড়ে সারিবদ্ধভাবে শোভা পাচ্ছে লক্ষাধিক আনারস গাছ। সুন্দর আর মনোরম পরিবেশে পাড়াগাঁয়ের ভেতরে গড়ে তোলা দৃ‌ষ্টিনন্দন এ আনারস বাগানের দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন শহর এবং আশপাশের মানুষ ছুটছেন দত্তরাইল গ্রামে। কোনো কোনো পাহাড়ের উপর পর্যটকদের বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা এবং নির্বিঘ্ন চলাচলে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বাগানে রয়েছে।

পর্যটকরা বলছেন, এই সবুজের সমাহার তাদের খুব আনন্দ দিচ্ছে, এখানকার নিরাপত্তা ও পরিবেশের জন্য অনেক দূর দূরান্ত থেকে ঘুরতে এসেছেন তারা। যে বা যারা এই আনারস বাগান করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন পর্যটকরা।

প্রায় ৬০ বিঘা জায়গা নিয়ে পারিবারিকভাবে এ আনারস বাগান গড়ে তুলেছেন ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দুইবারের চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল মতিন চাঁন মিয়ার সন্তানরা। বৃহদাকারে গোলাপগঞ্জে এটিই একমাত্র আনারসের বাগান। উত্তরাধিকার সূত্রে বিশাল ভূসম্পত্তির মালিক সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আবদুল মতিন চাঁন মিয়ার আট ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী।

আনারস চাষের উদ্যোগ ২০১৮ সালে নেয়া হলেও বাগান তৈরি হয় ২০১৯ সালে। শ্রীমঙ্গল থেকে হানিকুইন আনারসের চারা সংগ্রহ করে এ টিলাগুলোতে রোপণ করা হয়। বর্তমানে টিলাগুলোতে প্রায় ২ লাখ আনারসের গাছ রয়েছে। আনারস বাগান তৈরি করতে তাদের ব্যয় হয় ২৫ লাখ টাকা।

চাঁন মিয়া আনারস বাগানের পরিচালক কাওসার রাজ রতন জানান, আনারস বাগান থেকে যে টাকা আয় হয় তার ৭০ ভাগ টাকা চাঁন মিয়া এডুকেশন ট্রাস্টে দান করা হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় সাত-আটশো পাহাড় টিলা রয়েছে, যা আনারস চাষের জন্য উপযুক্ত স্থান। এখানে আনারস চাষে মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণসহ বিনোদনেরও ব্যবস্থা হবে।

বাগানে বর্তমানে কাজ করছেন ৫০ থেকে ৬০ জন। এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষে অনেকে এগিয়ে আসছেন বলে জানান বাগান সংশ্লিষ্টরা। এতে পাহাড় ধবংসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন