হোম অন্যান্যসারাদেশ সাতক্ষীরা জেলার মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও মৎস্যজীবীদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে গণশুনানি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি :

বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ সাতক্ষীরা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সাতক্ষীরা জেলার মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও মৎস্যজীবীদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এক গণশুনানির আয়োজন করা হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এর অর্থায়নে উত্তরণ-অপ্রতিরোধ্য প্রকল্পের আওতায় মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারী ঘোষনা ‘জাল যার-জলা তার’ এই নীতি বাস্তবায়নে সাতক্ষীরা জেলার জলমহালসমুহের বর্তমান চিত্র তুলে ধরা হয়।

সরকারী জলমহালে মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মৎস্য সম্পদ ও জেলেদের আত্ম-সামাজিক উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার দাবি রেখে বক্তারা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলার মাননীয় জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তরণ পরিচালক জনাব শহিদুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আনিছুর রহমান, জেলা সমবায় কর্মকর্তা খন্দকার মনিরুল ইসলাম, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবি এম খালিদ হোসেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুর-জোহরা, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়ানুর রহমান। অনুষ্ঠানে মৎস্যজীবীদের পক্ষে ধারণা পত্র পাঠ করেন জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মোল্যা। সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন উত্তরণ প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: মনিরুজ্জামান জমাদ্দার। গণশুনানি অনুষ্ঠানে উপস্থিত মৎস্যজীবীরা প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের কাছে তাদের বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন।

মৎস্যজীবীদের দাবি সমূহ-

মৎস্যজীবীদের তালিকা কত দিনের মধ্যে হাল নাগাদ করা সম্ভব। প্রকৃত জেলে কিন্তু এখনও জেলে কার্ড পাইনি তারা কতদিনের মধ্যে জেলে কার্ড পেতে পারে। সাগর ও সাগর সংশ্লিষ্ট নদ-নদীতে মৎস্য আহরণকারী এবং ইলিশ আহরণকারী জেলেদের কতদিনের মধ্যে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে এবং প্রচলিত নিয়মে কতদিনের মধ্যে তাদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে।

অ-মৎস্যজীবী অবৈধ প্রভাবশালী দখলদারদের হাত থেকে জলমহাল উদ্ধার হবে কিনা এবং অবৈধ দখল মুক্ত করা হলে কতদিনের মধ্যে তা সম্ভব হবে। খাস কালেকশন করার ক্ষেত্রে প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতির মাধ্যমে করার ঘোষনা চান তারা। তাছাড়া কোন জলমহাল চিংড়ীমহালের আওতায় থাকলে সেই জলমহালগুলো প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতির মাধ্যমে ইজারা দেয়া ও উন্মুক্ত জলমহালে সরকারী দখল ও রাজস্ব আদায় এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে মাছ ধরার স্বার্থে টোকেন রাজস্ব দিয়ে তাদেরকে অনুমতি পত্র দেয়া।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মৎস্যখামার বা জলমহাল ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিগ্রস্ত জলমহাল বা সমিতির ক্ষতিপূরণের জন্য সরকার কর্তৃক সহায়তার ব্যবস্থা এবং মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ,উৎপাদন বৃদ্ধিসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য জলমহাল উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি করেন।

তাছাড়া মামলাভূক্ত জলমহালগুলির মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। যে সব জলমহালের সিমানা এবং তফসিল সঠিক নেই সেই সকল জলমহালের সিমানা নির্ধারনে দ্রুত পদক্ষেপ ও ভরাটি জলমহাল খনন করে মৎস্য চাষ উপযোগী করে প্রকৃত মৎসজীবীদের মধ্যে বরাদ্দ দেবেন কি না এধরণের প্রশ্ন রাখেন।

গণশুনানী শেষে মৎস্যজীবীরা “সম্মেলন ২০২২” উৎযাপন করেন। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আনিছুর রহমান, প্রধান আলোচক এ্যাড, আবুল কালাম আজাদ, সভাপতি, কেন্দ্রীয় ভূমি কমিটি। আরো উপস্থিত ছিলেন দেবহাটা সিনিয়ার মৎস্য অফিসার আলমগীর হোসেন ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মৎস্য অফিসার শফিকুল ইসলাম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধ গুরুপদ দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক, জাতীয় মৎসজীবী সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন