জাতীয় ডেস্ক :
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, আল-কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে ‘জিহাদের’ পরিকল্পনা ছিল গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের। অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট দেখে তারা আল-কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়।
সোমবার (২ জানুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রব (২৮), মো. সাকিব (২৩), মো. শামীম হোসেন (১৮), মো. নাদিম শেখ (১৯), মো. আবছার (২০) ও মো. সাইদ উদ্দিন (১৮) সংগঠিত হয়ে সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে এখনও তারা সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করাতে পারেনি। এটা ছিল তাদের প্রথম প্রচেষ্টা। তারা নিজেদের মধ্যে সশস্ত্র জিহাদের আলোচনা করে এভাবেই হিজরত করার চেষ্টা করছিলেন।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করেন তারা। পরে স্থানীয় সহযোগীদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে জঙ্গিবাদ ছড়ানোর জন্য টেকনাফে অবস্থান করছিলেন। এরা টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়ার পরিকল্পনা করেন। তবে শুরুতে তেমন সদস্য সংখ্যা ছিল না, ধীরে ধীরে সদস্য সংখ্যা বাড়ান তারা।
জঙ্গিরা কম বয়সি তরুণদের খোঁজে থাকেন- এমন মন্তব্য করে সিটিটিসি প্রধান বলেন, বিভিন্ন অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের ৭০ শতাংশের বয়স ১৭ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে। এ বয়সিদের দ্রুত প্রভাবিত করা যায়। তাই এরা কম বয়সি তরুণদের টার্গেট করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলো সাইবার স্পেসে অনেকটাই সক্রিয়। তারা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জঙ্গি সদস্য নির্বাচন করে। তারা সাইবার স্পেসে তাদের যে নিজস্ব সাইট ও প্ল্যাটফর্ম আছে, সেখানে এনক্রিপটেড অ্যাপসের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন রেডিক্যালাইজড কনটেন্ট ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালায়। এই প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা লাইক বা কমেন্ট করে, তাদের মধ্য থেকে টার্গেট গ্রুপকে এক্সপার্ট জঙ্গিরা সদস্য নির্বাচন করেন।
গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
রোববার (১ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আল-কায়েদা মতাদর্শে অনুপ্রাণিত ৬ সদস্যকে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে গ্রেফতার করে।