বাণিজ্য ডেস্ক :
নেই কোনো ধরনের সংকট। রয়েছে অতিরিক্ত সরবরাহ। তারপরও শুধু অজুহাতের ওপর ভর করে চরমভাবে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার। চালের পর এবার ভোজ্যতেলের বাজারেও কৃত্রিমভাবে সরবরাহ সংকট তৈরির পাঁয়তারা চলছে। ডিলাররা বেশি দাম নিচ্ছেন বলে দাবি করেন খুচরা বিক্রেতারা। অথচ ডিলাররা বলছেন, সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। এদিকে দাম বৃদ্ধির লাগামহীন গতিতে অসহায় ক্রেতারা।
কারওয়ান বাজারে এক বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এক কেজি মসুর ডালের দাম ১৫ টাকা বেড়ে গেছে। এক কেজি পোলাওর চালের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এক কেজি চিনিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। আবার এক কেজি ময়দায় ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়ে গেছে।’
তার মতো অন্যসব বিক্রেতার কথায়ই মিলছে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি। চালের পর দিন দিন অস্থির হচ্ছে ভোজ্যতেলের বাজার। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনে বেড়েছে ১০ টাকা ও পাম তেলে বেড়েছে ৫ টাকা। কোম্পানি থেকে লিটারে ৩০ টাকা বাড়ানোর ইঙ্গিতের কথাও জানান বিক্রেতারা। ঘণ্টায় ঘণ্টায় দাম বাড়ায় আতঙ্কিত তারা। চাহিদানুযায়ী সরবরাহের ঘাটতির পাশাপাশি দাম বেশি নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
তেলের দাম শিগগিরই বাড়তে পারে উল্লেখ করে এক বিক্রেতা বলেন, ‘রবি বা সোমবার থেকে তেলের দাম নাকি বাড়বে।’ লিটারে কত বাড়বে? সে ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৪০ টাকা লিটারে বাড়বে বলে তারা অনুমান করছেন। একবারে এত দাম বাড়লে তো অনেক বেশি।
বাজারে তেল সংকটের বিষয়ে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সকাল থেকে সয়াবিন তেলের ২ লিটারের বোতল বাজারে নেই। গতকাল ছিল। আমরা এক-দুই কার্টন করে এনেছি। আজ সকালে ৫ লিটারের বোতল পেলেও ২ লিটারেরটা পাইনি।’
এদিকে খুচরা পর্যায়ে এমন অভিযোগের মধ্যেই ডিলাররা বলছেন, সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। তবে কোম্পানি থেকে ডিসকাউন্ট সুবিধা না থাকায় আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রির কথা জানান তারা।
তেলসহ প্রতিদিনই কোনো না কোনো ভোগ্যপণ্যের বাড়তি দামে পরিবার-পরিজনের ব্যয় মেটাতে অসহায় হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে একজন ক্রেতা বলেন, ‘দুই মাস আগে যে জিনিস ৯০০ টাকায় কিনেছি। সেটি আজ ১ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। সবকিছুর দামেই ঊর্ধ্বগতি। সবকিছু আমাদের এখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে দিন দিন। আমরা অসহায়ের মতো এখন। এদিকে তেলের দাম তো আকাশচুম্বী। আমাদের কষ্ট সরকার দেখবে কি না, তা তো তার ব্যাপার।’
বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল গায়ের দামের মধ্যে বিক্রি হলেও খোলা সয়াবিন লিটারে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায় ও পাম তেল ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। আর চিনি, ডাল, জিরাসহ কয়েকটি পণ্যের দাম ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে।