হোম জাতীয় শিগগিরই ওমান সরকার ভিসা স্থগিতাদেশ তুলে নেবে: ড. মোমেন

জাতীয় ডেস্ক:

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ওমানের ভিসা বন্ধ করে দেয়া আকস্মিক। আমাদের দূতাবাসকেও তারা জানায়নি। ঠিকমতো চাকরির ব্যবস্থা না করে আদম ব্যবসায়ীরা পাঠিয়ে দেয় অনেককে। এজন্য সাময়িক সময়ের জন্য ভিসা স্থগিতাদেশ হতে পারে। শিগগিরই ওমান সরকার এটা খুলে দেবে।

বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফর নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওমানের ভিসা বন্ধ করে দেয়া আকস্মিক। আমাদের দূতাবাসকেও তারা জানায়নি। ঠিকমতো চাকরির ব্যবস্থা না করে আদম ব্যবসায়ীরা পাঠিয়ে দেয় অনেককে। এজন্য সাময়িক সময়ের জন্য ভিসা স্থগিতাদেশ হতে পারে।

আমরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছি শিগগিরই ওমান সরকার এটা খুলে দেবে। তবে ভবিষ্যতে যাচাই বাছাই করে প্রবাসীদের ওমানে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভিসা পেয়েছেন তারা যেতে পারবেন।

সাময়িক স্থগিতাদেশের মধ্যে আছে কয়েকটি দেশ। ওমান বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে কিছুদিনের মধ্যে খুলে দেবে। এক্ষেত্রে কূটনৈতিক বা সরকারি কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ওআইসির নারী নেতৃত্ব সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী রোববার সৌদি আরবে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৫ থেকে ৮ নভেম্বর সৌদি আরব সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সফরে তিনি ওমরাহ পালন করবেন।

প্রসঙ্গত: ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথম ওমানে যান ৩৭ জন বাংলাদেশি। এর মধ্যদিয়ে উন্মোচিত হয় নতুন শ্রমবাজার। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ৪৩ বছরে ওমানে গেছেন প্রায় ১৮ লাখ বাংলাদেশি। সবশেষ দেশটিতে বিভিন্ন কাজে ও স্বজন নিয়ে প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছেন।

দীর্ঘ ৪৩ বছরে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে শ্রম বাজার উন্মুক্ত থাকলেও, হঠাৎ করেই গেল ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ থেকে ওমানে যাওয়ার সব ধরনের ভিসা স্থগিত করে দিয়েছে মাসকট সরকার।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শ্রমিক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণেই বাংলাদেশি নাগরিকদের নতুন ভিসা দেয়া স্থগিত করেছে ওমান। এতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শ্রম বাজার বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ, যার প্রভাব পড়বে রেমিট্যান্সে। আর জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের বড় একটি বাজার হারালো বাংলাদেশ।

নির্দিষ্ট কোনো কারণ না জানালেও ওমানের রয়্যাল পুলিশের বিবৃতি বলা হয়েছে, পর্যটক ও ভ্রমণ ভিসা পরিবর্তন করে কাজে নিযুক্ত হতে পারবে না কোনো দেশের নাগরিক। এ সুবিধা স্থগিত হওয়ায় এমন ভিসায় যারা ওমানে অবস্থান করছেন, তাদের মধ্যে অন্যান্য দেশের নাগরিকরা কাজের ভিসা নিয়ে ফিরতে পারলেও, বাংলাদেশিদের জন্য সব ধরনের ভিসাই স্থগিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তথ্য বলছে, দেশটির শেয়ার বাজারে ধস, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের প্রভাব, অন্যান্য দেশের চেয়ে অতিরিক্ত বাংলাদেশি কর্মীর চাপ এবং অনেক কর্মীর কর্মসংস্থান সংকটের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওমান সরকার।

সৌদি আরবের পর ওমান বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান শ্রমবাজার। নতুন করে দেশটিতে ভিসা স্থগিত হওয়ায় প্রতি মাসে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স কমবে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ কোটি ডলার। এমন অবস্থায় কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।

এদিকে ওমানে বাংলাদেশ থেকে কাজের ভিসা বা চুক্তিভিত্তিক যারা অবস্থান করছেন, তাদের সত্যায়িত করার লক্ষ্যে সব ধরনের ডকুমেন্ট আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন