হোম আন্তর্জাতিক শততম দিনে গড়ালো গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, হামলা চলছেই

শততম দিনে গড়ালো গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, হামলা চলছেই

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 117 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শততম দিনে গড়িয়েছে। গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার ও হামলা বন্ধে বিশ্ববাসীর আহ্বান উপক্ষে করেই এখনও আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। তাদের এই নির্বিচার বোমাবর্ষণ কেউ বন্ধ করতে পারবে না বলেও হুঙ্কার দিয়েছেন দেশটির নেতারা।

এদিকে গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলা ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। আল জাজিরা।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শততম গড়িয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, রাত থেকেই দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে নতুন করে দুই বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে।

এতে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৮৪৩ জনে। আহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে জেনিন এলাকায় চলছে বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি ধ্বংস।

গাজা যুদ্ধের শততম দিন সামনে করে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ৩০টি দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষ এসব বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।

‘গ্লোবাল ডে অব অ্যাকশন’র অংশ হিসেবে এসব বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলি বোমায় বিধ্বস্ত গাজার অধিবাসীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন তারা। গাজায় অবিলম্বে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিও জানান তারা।

গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং ইসরাইলের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কয়েকটি সংগঠনের জোটের পক্ষ থেকে এই সমাবেশের ডাক দেয়া হয়।

এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঙ্কার দিয়েছেন, গাজায় ইসরাইলের অভিযান কেউ বন্ধ করতে পারবে না। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইলকে বিজয় অর্জন থেকে কেউ বাধা দিতে পারবে না।

বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের হত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন এবং সম্প্রতি পবিত্র আল আকসা মসজিদে হামলা ও অবমাননার জবাবে গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে আকস্মিক অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হওয়ার দাবি করে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ। যদিও সেই সংখ্যা ১ হাজার ১৩৯ জন বলছে তেল আবিব।

হামাসের ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজায় ব্যাপক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। যা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০০ দিনের হামলায় গাজার ৪৫-৫৬ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৫টি আংশিকভাবে কাজ করছে। ইসরাইলি হামলায় ১২১টি অ্যাম্বুলেন্স অকেজো হয়ে গেছে।

২৩ লাখ নাগরিকের ২২ লাখই খাদ্য সংকটে ভুগছে। ৮ লাখ ফিলিস্তিনি ক্ষুধা ও অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। স্কুল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৯ শতাংশের বেশি। ফলে সোয়া ৬ লাখ স্কুল শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে।

গাজার রাফাহ এলাকায় কুয়েতি হাসপাতালের চিকিৎসক সুহাইব আল-হামস বলেন, ‘এই ১০০ দিন কীভাবে কেটে গেল? গাজাবাসী এই সময়গুলো তিক্ততার সঙ্গে, শহীদদের সঙ্গে, আহতদের নিয়ে সময় পার করেছে। তারা বেদনা, নিষ্ঠুরতা ও দুঃখের দৃশ্য নিয়ে পার করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু বাড়িঘরই নয়, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলেরও ধ্বংস দেখেছি। ইসরাইল বোমা হামলা করেছে হাসপাতাল, রাস্তা, চিকিৎসক দল বা অ্যাম্বুলেন্স সবকিছুর ওপর। তারা কোনো কিছুই বাদ দেয়নি।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন