হোম খেলাধুলা রিজওয়ানের কৌতুক: কখনো সত্যিই ক্র্যাম্প হয়, কখনও অভিনয় করি

স্পোর্টস ডেস্ক:

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ইনিংস নিয়ে মুগ্ধতা কাটছেই না। ৩৪৪ রান তাড়া করতে নেমে দ্রুত দুই উইকেট হারানো পাকিস্তান জয় পেয়েছে আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দারুণ দুই সেঞ্চুরিতে। আব্দুল্লাহ শফিক সেঞ্চুরি করে আউট হয়ে গেলেও রিজওয়ান ম্যাচ জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন। এই দারুণ ইনিংসটির মাঝপথেই মাংসপেশীতে ক্র্যাম্প শুরু হয় এই উইকেটকিপারের। কিন্তু সে যন্ত্রণা নিয়েই ম্যাচ শেষ করেছেন তিনি। যে কারণে প্রশংসা পাচ্ছেন আরও বেশি। তবে কেউ কেউ ব্যঙ্গও করছেন রিজওয়ানকে নিয়ে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৪৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অষ্টম ওভারেই দুই উইকেট হারায় পাকিস্তান। এর মধ্যে ছিল অধিনায়ক ও দলের সেরা খেলোয়াড় বাবর আজমের উইকেটটিও। বিশ্বকাপে এতো রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই একটিও। তাই পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জটা আরও বেশিই ছিল। সে সময়েই ব্যাট করতে নামেন রিজওয়ান। আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অর্ধশতক হাঁকানো এই উইকেটকিপার ব্যাটার এবারও দলের ত্রাতা হয়েছেন। অপরাজিত সেঞ্চুরি করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন।

তবে এই ইনিংস খেলার মাঝপথেই পায়ের মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প শুরু হয় রিজওয়ানের। অর্ধশতক পূরণ করার পরেই হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে তার। দৌড়ানোর সময় তার অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল যন্ত্রণার কথাটা। ব্যাটিংয়ের সময়ও বোঝা যাচ্ছিল স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না রিজওয়ান।

গতকালের ম্যাচের ভেন্যু হায়দরাবাদে তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতো গরমে টানা ৩০০ বল উইকেটকিপিংয়ের পর দ্রুতই ব্যাটিংয়ে নেমে পড়ায় এমন মাসল ক্র্যাম্প স্বাভাবিক ব্যাপারই। ৩ ঘণ্টা ১৩ মিনিট ব্যাট করা রিজওয়ান ক্র্যাম্পের সঙ্গে লড়েছেন শেষ ১৫ ওভার। ৩৬তম ওভারে একটি ওয়াইড বল খেলতে গিয়ে যেভাবে যন্ত্রণায় কুকড়ে উঠেছিলেন, তাতেই প্রথম বোঝা যায় তার সমস্যাটা। এর পরের ওভারে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে লং অন দিয়ে ছক্কা মেরেই মাটিতে শুয়ে পড়েন রিজওয়ান। মুখের পেশিগুলোর অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছিল, যন্ত্রণাটা প্রবল।

তবে তার এই শুয়ে পড়া হাস্যরসেরও জন্ম দিয়েছে। অনেকেই সন্দিহান, আসলেই রিজওয়ানের মাসল ক্র্যাম্প হয়েছে? এই সন্দেহ নিউজিল্যান্ডের সাবেক খেলোয়াড় ও ধারাভাষ্যকার সায়মন ডুলেরও। তিনি তো ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে বলেই বসেন, ‘ওকে সিনেমায় নামিয়ে দাও।’ ম্যাথু হেইডেনও যোগ দেন তার সঙ্গে। তিনি খোঁচা মেরে বলেন, ‘এর পর শরীরের কোন ঠিক জায়গায় এটা (ক্র্যাম্প) করতে হবে সেটা সে (রিজওয়ান) বুঝতে পারছে না।’

ম্যাচ শেষে রিজওয়ানও বিষয়টি খোলাসা করেননি। ১২১ বলে ৩ ছক্কা ও ৮ চারে ১৩১ রান করে বিশ্বকাপে রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে দলকে জয় এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। পরে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে সায়মন ডুলের রসিকতা করে করা প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ান বলেন, ‘কখনো সত্যিই ক্র্যাম্প হয়, কখনও অভিনয় করি।’ কথাটা বলেন শ্লেষ্মাত্মক হাসি দিয়েই।

অভিনয় করুক আর যাই করুক, পাকিস্তান সমর্থকরা আপাতত বুঁদ রিজওয়ান জাদুতে। চলতি বছর দারুণ ফর্মে রিজওয়ান। ১৮ ম্যাচে ৭৫.১৮ গড়ে ৮২৭ রান করে চলতি বছর এই উইকেটকিপারই পাকিস্তানের হয়ে সফলতম ব্যাটার। বিশ্বকাপেও প্রথম দুই ম্যাচ শেষে ১৯৯ রান করে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনিই।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন