হোম অন্যান্যসারাদেশ যতই দিন যাচ্ছে সাতক্ষীরার উপকুলীয় বানভাসি মানুষের দূর্দশা বাড়ছে, পানি বন্দী লক্ষাধিক মানুষ

যতই দিন যাচ্ছে সাতক্ষীরার উপকুলীয় বানভাসি মানুষের দূর্দশা বাড়ছে, পানি বন্দী লক্ষাধিক মানুষ

কর্তৃক
০ মন্তব্য 79 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি :

যতই দিন যাচ্ছে ততই সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আশাশুনি ইউনিয়নের বানভাসি মানুষের দূর্দশা বাড়ছে। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। বাড়িঘর ছেড়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে, বিভিন্ন সড়কে ও বাধের উপর। জোয়ার ভাটা চলছে প্রতাপনগর ইউনিয়নের ১৭ টি ও শ্রীউলা ইউনিয়নের ২২টি গ্রামসহ আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৬টি গ্রামে। সেখানে এক খন্ড জমিও কোথাও শুকনা নাই। সবই পানিতে নিমজ্জিত। দূর্গত এলাকায় কেউ মারা গেলে মাটি দেয়ার জায়গাটুকু পর্যন্ত সেখানে নাই। তার উপর প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সম্পুর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধ্বসে পড়েছে শতাধিক কাঁচাঘরবাড়ি।

পানিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমিসহ গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি। রান্না-বান্না ও গৃহস্থালীর কোন কাজ করতে না পারায় শুকনা খাবারেই নিভাতে হচ্ছে পেটের ক্ষুধা। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের দীর্ঘ তিন মাস পেরিয়ে গেলেও পানি বন্দী হয়ে প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের মানুষ এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তার উপর অস্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জোয়ার-ভাটা বইছে লোকালয়ে ও বাড়ির উঠানে। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে লক্ষাধিক মানুষ। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব।

এদিকে, শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে স্থানীয় ইউপি চেয়ারর‌্যানের নেতৃত্বে আজ সকাল থেকে আবারও হাজার হাজার এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে লেবুবুনিয়া গ্রামের ৬ টি স্থানের রিংবাধ সংস্কারের কাজ করছেন। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, তার ইউনিয়নে এখনও ১০ টি গ্রাম পানিতে নিজ্জিত।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল শ্যামনগর উপজেলার গাবুরার লেবুবুনিয়া রিংবাধ সংস্কারের কাজ পরিদর্শন শেষে জানান, ইতিমধ্যে আশাশুনি ও শ্যামনগরের বন্যা দুর্গত মানুষের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য ২শ’ ৯০ মেট্রিকটন চাউল ও ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য :

গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০টি পয়েন্টে সাড়ে ৫৭ কিলোমিটার বেঁড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায়। ওই সময় বেশকিছু স্থানে রিং বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা করা হলেও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের বড় একটি অংশের লোকালয়ে গত তিন মাস ধরে চলে জোয়ার-ভাটা। কিছু কিছু এলাকায় মানুষ রিং বাধ দিয়ে পানি বন্ধ করে ধীরে ধীরে ঘুরে দাড়াতে শুরু করলেও গত অমাবশ্যায় জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় তলিয়ে যায় একের পর এক নতুন নতুন এলাকা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন