জাতীয় ডেস্ক:
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ওপর ভর করে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয় ময়মনসিংহে। এবার একে একে বেরিয়ে আসছে সহিংসতার ক্ষতচিহ্ন। পুড়ানো হয়েছে সরকারি গাড়ি, স্পিনিং মিল। ভাঙচুর করা হয় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও পুলিশ বক্সসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আহত হয় ২৭ পুলিশ সদস্য।
ময়মনসিংহে একের পর এক দৃশ্যমান হচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষত। নাশকতাকরীরা তান্ডবে রেশ রয়েছে গৌরীপুরের তাল্লু স্পিনিং মিলে। এখানে রাখা পুলিশের দুটি গাড়িসহ মিলের গোডাউন আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় নাশকতাকারীরা। এতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা।
জানা গেছে, গত ২০ জুলাই কাউফিউ চলাকালে কলতাপাড়া এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের তীব্রতা টের পেয়ে পুলিশের দুটি গাড়ি নিরাপদে রাখা হয় স্পিনিং মিলে। বিষয়টি টের পেয়ে একদল নাশকতাকারী গাড়িসহ মিলের গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুড়ে ছাই হয় গাড়ি দুটি। বাদ যায়নি তুলাসহ সুতা তৈরির সব উপাদান। এতে করে তুলা সংকটে বন্ধ রয়েছে মিলটি।
মিলটির সিনিয়র ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন বলেন, ওরা গাড়ি দুটিকে টার্গেট করে রেখেছিল। মিলের ভেতর ঢুকানোর পর একদল যুবক গাড়ি খুঁজতে আসে। খুঁজতে খুঁজতে গোডাউনের ভেতর আসেন তারা তারা। পরে গাড়ি দুটিতে আগুন দেয়ার পাশাপাশি গোডাউনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া মিলে ভাঙচুরও করা হয়।
এর আগে ১৯ জুলাই কোটা সংস্কারের একটি মিছিল থেকে ময়মনসিংহ নগরীর গোলপুকুরপাড় এলাকায় সড়কের পাশে পার্কিং করা এসিল্যাণ্ডের গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয় দুষ্কৃতিকারীরা। একই সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসায় হামলা করা হয় হামলা। ভেঙে ফেলা হয় তিনটি পুলিশ বক্স ও শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা।
নাশকতার জন্য বিএনপি-জামাতকে দায়ী করে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘এই নাশকতাকারীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। দেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা দীর্ঘদিন ধরেই এমন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। যারা এই ধরণের নৈরাজ্যের মাধ্যমে দেশের সম্পদকে নষ্ট করেছে তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।’
নাশকতাকারীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে জানিয়ে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, ‘সহিংসতায় গৌরীপুর থানার ওসি গুলিবিদ্ধসহ পুলিশের ২৭ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড যারা করেছে তাদের ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে ও অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলমান অভিযানে এদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে।’