হোম জাতীয় মোরশেদ হত্যা: মৃত্যু নিশ্চিতে হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলানো হয় শরীর

জাতীয় ডেস্ক :

জমিতে সেচ ব্যবস্থাপনার ব্যবসার আধিপত্য বজায় রাখতেই গত ৭ এপ্রিল কক্সবাজারে প্রতিবাদী যুবক মোরশেদকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে পিটিয়ে-কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করা হয়।

এমনকি মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলো। মূলত সেচব্যবস্থা নিয়ে প্রভাবশালী মহলের জিম্মি দশা থেকে কৃষকদের মুক্ত করতে গিয়েই প্রাণ দিতে হয়েছিল মোরশেদকে।

কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ৫ সদস্যকে আটকের পর বের হয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের নানা তথ্য।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, মোরশেদকে প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল একই পরিবারের ৫ সদস্য। রোজা রাখায় ইফতারের পর মারার জন্য হত্যাকারীদের কাছে আকুতি জানিয়েও রক্ষা পায়নি মোরশেদ। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তারা গা-ঢাকা দেয়। এমনকি কক্সবাজার ছাড়ারও চেষ্টা করে। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

এমএ ইউসুফ বলেন, আসামিরা অন্যায়ভাবে পানি সেচ স্কিম নিজেদের দখলে নিয়ে চাষিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা দাবিসহ অন্যায় অত্যাচার করে আর্থিকভাবে ক্ষতি করতে থাকে। এসব কারণে মোরশেদের পরিবারের ওই স্কিম ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকলে আসামিরা তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ ছাড়া মোরশেদ আলী দুষ্কৃতকারীদের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। এমনকি বিভিন্ন সময় রাস্তায় আক্রমণ করতে গেলে স্থানীয় উপস্থিত লোকজনের কারণে সফল হয়নি।

র‌্যাব অধিনায়ক জানান, ঘটনার দিন মোরশেদ বাড়ি থেকে বের হয়ে ইফতার কেনার জন্য কক্সবাজার সদর থানাধীন চেরাংঘর স্টেশনের তরকারির দোকানের সামনে পোঁছালে দুষ্কৃতকারীরা দুই দিকের রাস্তা বন্ধ করে মোরশেদকে মাটিতে ফেলে প্রথমে ধারাল কিরিচ দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুরুতর জখম করে। এরপর আসামি আবদুল্লাহ (৩০) এবং আবদুল আজিজ (২৮) লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মোরশেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করলে মোরশেদ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আসামি মোহাম্মদুল হক ও মাহমুদুল হক ধারাল কিরিচ দিয়ে মোরশেদ আলীর ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।

এ ঘটনায় মোরশেদের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সবাই পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা। ঘটনার পর তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

 

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন