বাণিজ্য ডেস্ক:
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানো নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও মোবাইল অপারেটররা। নির্বাচন সামনে রেখে গ্রাহকদের তিন দিনের দামে সাত দিনের ডেটা প্যাকেজ দিতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। তবে ডেটা প্যাকেজের দাম নিয়ে মন্ত্রীর এমন নির্দেশনাকে ‘অধিকতর হস্তক্ষেপ’ হিসেবে দেখছে মোবাইল অপারেটররা।
চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ৩ ও ১৫ দিন মেয়াদের মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। দুটি কারণে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তোলে মোবাইল অপারেটররা। প্রথমত, প্রায় ১২ কোটি গ্রাহকের মধ্যে তিন দিনের ডেটা প্যাকেজ ব্যবহার করতেন প্রায় ৭০ শতাংশ। দ্বিতীয়ত, নতুন নিয়মে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে বলে জানায় অপারেটররা। যদিও সেটি আমলে নেয়া হয়নি।
এদিকে গত ১৫ অক্টোবর বিটিআরসির সিদ্ধান্ত কার্যকরের পর দেখা যায় ডেটা প্যাকেজে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে মোবাইল অপারেটররা। বাংলালিংকের এক জিবি ডেটা তিন দিন মেয়াদে দাম ছিল৪৯ টাকা। বর্তমানে তার দাম ৬৯ টাকা। রবির ৬৮ টাকায় তিন দিনের ডেটা প্যাকেজটি সাত দিন মেয়াদে কিনতে হচ্ছে ৯৮ টাকায়; যা নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।
এ অবস্থায় গত রোববার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি কার্যালয়ে মোবাইল অপারেটরদের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। অপারেটর ও বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে নির্বাচনের আগে ডেটা প্যাকেজের দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। এ সময় গ্রাহকদের তিন দিনের দামে সাত দিনের ডেটা প্যাকেজ অফার করতে নির্দেশ দেন তিনি; যা বাস্তবায়নে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।
দেশের টেলিকম অপারেটরদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করতে হলে দেশের জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। ৮ নভেম্বরের মধ্যে টেলিটক এবং ১০ নভেম্বরের মধ্যে অন্য সব অপারেটরকে বৈঠকের নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। আশা করি, অপারেটরদের বোধোদয় হবে। তারা ৯৫টি প্যাকেজকে ৪০টিতে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের দাম বাড়াবে না। তখন ইন্টারনেটের দাম কমাবে।
তবে অপারেটর সূত্র বলছে, মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হলেও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দাফতরিক আদেশ পাননি তারা। এদিকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব এক বিবৃতিতে ‘মোবাইল অপারেটররা সরকারকে সহযোগিতা করছে না’ মন্ত্রীর দেয়া এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে। আপত্তি তুলেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ নিয়েও।
এ ছাড়া মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর নির্দেশনা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামটব।