খেলার সংলাপ:
আইপিএলে চলতি আসরে দিল্লি ক্যাপিটালসের ফেসবুক পেজ দেখলে আপনার মনে হতে পারে, পেসার মুস্তাফিজুর রহমান দলটির সবচেয়ে বড় তারকা। ফ্র্যাঞ্চাইজির অফিসিয়াল ফেসবুক ঘুরে দেখা যায়, মুস্তাফিজকে খেলানোয় যত না মনোযোগ, তার চেয়ে বেশি মনোযোগ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর প্রচার-প্রচারণায়।
আইপিএলের চলমান প্রথম রাউন্ডের খেলায় মোস্তাফিজ দিল্লির হয়ে মাঠে নেমেছেন মোটে দুবার। আর লিটন তিন ম্যাচ বসে থাকার পর সুযোগ পেয়েছেন এক ম্যাচে। মূলত ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বাংলাদেশি ক্রিকেটার যে উদ্দেশ্যে দলে ভিড়িয়েছে সে উদ্দেশ্য থেকে সরে গেছে। তারা এখন তাদের বেঞ্চে বসিয়ে নিয়মিত নিজেদের প্রচার-প্রচারণায় কাজে লাগাচ্ছে।
বিশেষ করে মুস্তাফিজকে দিয়ে প্রচারণাটা একটু বেশিই করাচ্ছে দিল্লি। মুস্তাফিজকে দিয়ে নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক দেওয়ার প্রচারণার পর এবার নিজেদের বাসমতি চালের বিজ্ঞাপনে দেখা গেল মুস্তাফিজকে। আজ শনিবার (২২ এপ্রিল) দিল্লির ভেরিয়ায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা যায় কাটার মাস্টারের সঙ্গে বাসমতি চালের বিজ্ঞাপণে আরও ছিলেন সরফরাজ খান ও আমান আহমেদ। যাদের কেউই নিয়মিত একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেম নিয়ে খেলছে কি আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন ভক্ত-সমর্থকরা। কারণ লিটন-মোস্তাফিজদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা মানেই লাইক-কমেন্ট, আর শেয়ারের বন্যা। যা দিনশেষে পকেট ভারী করছে আইপিএলের দলগুলোর। তাদেরকে দিয়ে (লিটন-মোস্তাফিজ) প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে নিজেদের স্যোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশি ভক্তদের সংযুক্ত করছে তারা।
অবশ্য আইপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে এমন আচরণ নতুন কিছু নয়। এর আগেও মাঠে নয় ফেসবুকেই বেশিরভাগ সময় থাকতে হয় এদেশের ক্রিকেটারদের। অতীত অভিজ্ঞতা অন্তত তাই বলে। কারণ সাকিবের মতো বিশ্বসেরা তারকাকেও না খেলিয়ে বসিয়ে রেখেছিল হায়দরাবাদ-কলকাতার মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশের হয়ে যখন আয়ারল্যান্ড সিরিজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন, সে সময় মোস্তাফিজকে উড়িয়ে নিয়ে যায় দিল্লি। তাড়াহুড়ো দেখে মনে হচ্ছিল মোস্তাফিজ দলের পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে তা উল্টো। খেলার মাঠে নয় বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই মোস্তাফিজকে নিয়ে দিল্লির ফ্র্যাঞ্চাইজির মাতামাতি চলছে।
প্রচারণার এ ধারায় সোমবার (১৭ এপ্রিল) দিল্লির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেখা মিলল মোস্তাফিজের। সেখানে এক ভিডিওতে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চ্যানেলসমূহ ফলো করার আহ্বান জানাতে দেখা যায় তাকে। সাত সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে মোস্তাফিজকে বাংলায় কথা বলতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের যত সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল আছে–ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ফেসবুক; আপনারা সবাই ফলো করুন।’
মুস্তাফিজের মতো পণ্যের প্রচারণায় এখনও দেখা না গেলেও, লিটনকে নিয়েও কলকাতার মাতামাতি কম নয়। তারাও বেশিরভাগ পোস্টেই লিটনের ছবি জুড়ে দেয় লাইক, কমেন্ট আর শেয়ারের আশায়।