বাণিজ্য ডেস্ক :
খোলা তেলের সরবরাহ বাড়লেও রাজধানীর বাজারে সংকট কাটেনি বোতলজাত সয়াবিনের। মিল থেকে ভোজ্যতেল সরবরাহ না করার অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায় বোতলজাত সয়াবিন তেল মজুতের অপরাধে দুটি দোকানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অপরদিকে আগামী ১৬ মে থেকে সুলভ মূল্যে ট্রাকে তেল বিক্রি করবে টিসিবি।
বুধবার (১১ মে) সকালে রাজধানীর মিরপুর এলাকার শাহ আলী সিটি করপোরেশন মার্কেটের দোকানে দোকানে ঘুরে দেখা মিলল না কোনো বোতলজাত সয়াবিন তেলের। এমন সংকটের কারণ হিসেবে বিক্রেতারা জানান, দাম বাড়ানোর পরও তেল নিয়ে বাজারে আসছেন না কোম্পানির প্রতিনিধিরা। এমনকি নিচ্ছেন না নতুন কোনো অর্ডার। স্বাভাবিকভাবেই বোতলজাত তেল কিনতে এসে খোলা সয়াবিন নিতে বাধ্য হচ্ছেন ভোক্তারা।
কোম্পানি থেকে তেল সরবরাহ না হওয়ার অভিযোগ করে বিক্রেতারা বলেন, খোলা সয়াবিন তেল ও পাম তেল পেয়েছি। কিন্তু বোতলজাত তেল পাচ্ছি না। দাম বেশি আসবে তাই কোম্পানি তেল দিচ্ছে না। ডিলার বলছে, কোম্পানি তেল দিচ্ছে না। তাই আমরা বোতলজাত তেল পাইনি।
এ বাজারে খুচরা-পাইকাররা খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন পর্যাপ্ত, দামও নিম্নমুখী বলে দাবি করেন তারা। তবে তারা এ-ও দাবি করেন, তেল এখনো ফোনে ফোনে ও অনলাইনে কিনতে হচ্ছে। তাই বেচাকেনায় কোনো পাকা রসিদ মিলছে না।
ফলে উচ্চ দামের কারণে বাজারে এসে নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে তেল কিনতে এসে নাজেহাল ক্রেতারা বলেন, বোতলজাত তেল বাজারে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানিরা নাকি সরবরাহ পাচ্ছেন না। তিন কেজি খোলা সয়াবিন ৫৭০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। ৫৭০ টাকার তেল কত দিনই-বা আমাদের চাহিদার জোগান দেবে।
আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘এক লিটার খোলা তেল ২২০ টাকা দিয়ে কিনেছি। আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরের কাজ করি। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে তো চলা মুশকিল।’
এদিকে ভোজ্যতেলের বাজার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দক্ষিণখানের আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মজুত করা ১৩৮ লিটার তেল উদ্ধার করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ সময় অনেক বোতলের গায়ে ঘষে দাম তুলে ফেলারও প্রমাণ মিলেছে।
অভিযানকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, ‘আগের বোতলজাত তেলের যে দাম ছিল, এটি ঘষে মুছে দিয়ে বর্তমান দামে বিক্রি করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। এ অপরাধে আমরা দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করলাম।’
অপরদিকে আগামী ১৬ মে থেকে আবারও সুলভ মূল্যে তেলসহ পণ্য বিক্রি শুরু করবে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি। তবে তেল কত দামে বিক্রি হবে, তা এখনো নির্ধারণ করেনি সংস্থাটি।
এ বিষয়ে টিসিবির ঊর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন কবির বলেন, ট্রাকসেলে কী দামে তেল বিক্রি হবে, সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। এটি নির্ধারিত হলে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, টিসিবির এবারের বিক্রি কার্যক্রম ৩০ মে পর্যন্ত চলবে।