স্পোর্টস ডেস্ক:
২০২৩ বিশ্বকাপে এক ক্রিকেটারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করা হয়। হাথুরুকে চাকরিচ্যুত করতে ২০২৩ বিশ্বকাপের তদন্ত প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছিলেন সদ্য সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তবে সেই তদন্ত কমিটির সদস্য বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম জানিয়েছেন, তাদের করা তদন্তে এমন কোনো ঘটনার সত্যতা মেলেনি!
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় ৮ বিসিবি পরিচালক। চিঠিতে একটি কারণ উল্লেখ করা হয়, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে হাথুরুসিংহেকে চাকরিচ্যুত করেন ফারুক। যদিও হাথুরুসিংহেকে চাকরিচ্যুত করার সময় এই পরিচালকরা তাতে সায় দেন। কাউকে আপত্তি জানাতে দেখা যায়নি।
৮ বিসিবি পরিচালকের দেওয়া চিঠির ওপর ভিত্তি করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুক আহমেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে। ফলে সেই শূন্য পদের বিপরীতে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়। এরপর বোর্ড সভায় বিসিবির পরিচালকদের ভোটে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আমিনুল।
নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার দিনে আবার উঠে আসে হাথুরুসিংহে প্রসঙ্গ। সেখানে বিসিবির প্রভাবশালী পরিচালক মাহবুব আনাম যা বললেন তাতে ফারুকের কথা মিথ্যা হয়ে যায়। মাহবুব আনাম বললেন, ‘আমাদের প্রতিবেদনে যদি এরকম কোন কিছু থাকত তাহলে তো তখনই আমরা তা প্রকাশ করতাম। এরকম কোন কিছু ছিলো না।’
২০২৩ বিশ্বকাপে ভরাডুবি হয় বাংলাদেশ দলের। এরই মাঝে একটি গণমাধ্যমে বের হয় বোলার নাসুম আহমেদকে নাকি আঘাত করেছেন কোচ। বিশ্বকাপ ব্যর্থতা ও এই বিষয় নিয়ে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। যার প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়নি।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর থেকে বিসিবিতে আসে নতুন নেতৃত্ব। ফারুক এনএসসির কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবির পরিচালক হন। এরপর ২১ আগস্ট পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন।
২০১৬ সালে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বপালনকালে হাথুরুর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েই পদ ছেড়েছিলেন ফারুক। তাই ফারুক বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর পরই হাথুরুসিংহের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। দায়িত্ব নেওয়ার আগেও তিনি এই কোচকে সরিয়ে দেওয়ার কথা উচ্চারণ করেন। নভেম্বরে ভারত সফর শেষে হাথুরুসিংহেকে চাকরি থেকে সরিয়ে ফারুক বলেন, ‘ক্রিকেটারকে আঘাত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কথা লেখা আছে ২০২৩ বিশ্বকাপের তদন্ত প্রতিবেদনেও।’
তবে একাধিক গণমাধ্যমে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন হাথুরু। এমনকি বাংলাদেশের চাকরি ছেড়ে যাওয়া সহকারি কোচ নিক পোথাস পরে এক গণমাধ্যমে বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
এবার তদন্ত কমিটির সদস্য ও বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনামও জানালেন এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাই এখন প্রশ্ন উঠছে, তবে কি হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন ফারুক।