আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের ‘নিখোঁজ’ বিমান এমএইচ-৩৭০ নিয়ে কিছুদিন পরপরই মেলে নানা ধরনের খবর। যার বেশিরভাগই যাচাই করা যায় না কিংবা থাকে না ভিত্তি। এবার সেই বিমানের একটি ‘বড় টুকরো’ খুঁজে পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার একজন জেলে। যদিও তার এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এনডিটিভি জানিয়েছে, নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার ৯ বছর পর এসে কিট ওলভার নামে ওই জেলে সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের কাছে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের বিমানটির ‘বড় টুকরো’ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেন।
ওলভার সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে জানান, বিমানটি ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ৬ মাস পর তার জালে একটি বস্তু আটকে যায়, যেটি ওই বাণিজ্যিক বিমানের একটি ডানা ছিল বলে বিশ্বাস তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার ৭৭ বছর বয়সী ওই জেলে এত বছর এ সম্পর্কে কোনো কথা বলেননি। কিন্তু এখন তিনি চান যে বিশ্ব তার গল্প শুনুক।
ওলভার বলেন, ‘এটি একটি বড় জেট বিমানের বিশাল এক ডানা ছিল। আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি, আমি এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজেছি। এমন কিছু কখনো দেখতে না পেলেই ভালো হতো, কিন্তু আমি দেখেছি। এটি একটি বিমানের ডানা ছিল।’
ডানাটি একটি ব্যক্তিগত বিমানের চেয়েও বড় ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
এছাড়া, অনেক ওজন হওয়ার কারণে ২০ হাজার ডলার মূল্যের জাল কেটে ফেলেও ওই ডানাটি মাছ ধরার ট্রলারে তুলতে পারেননি বলে দাবি ওলভারের। তবে কোথায় তিনি এটি আবিষ্কার করেছিলেন, সেই স্থান সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে তথ্য দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এলাকাটি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার রোবে শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পশ্চিমে বলে দাবি করেছেন ওলভার।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ-৩৭০ ছিল একটি বোয়িং ৭৭৭ বিমান। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বিমানটি। আকাশে ওড়ার প্রায় ৩৮ মিনিট পর সেটির সঙ্গে যোগাযোগ করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)। সেই সময় বিমানটি দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর দিয়ে উড়ছিল।
এর কয়েক সেকেন্ড পরই বিমানটির সঙ্গে এটিসির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর মালয়েশিয়া সেনাবাহিনীর রাডারে ধরা পড়ে বিমানটি। তবে নিয়মিত চলাচলের পথ থেকে পশ্চিম দিকে সরে তখন সেটি মালয় উপদ্বীপ ও আন্দামান সাগর অতিক্রম করছিল।
এরপরই চিরতরে হারিয়ে যায় ফ্লাইট এমএইচ-৩৭০। দক্ষিণ চীন সাগর ও আন্দামান সাগরে তল্লাশি করলেও, বিমানটির খোঁজ মেলেনি আর।
বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তদন্তকারীরা এ নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন। সবশেষে এ সংক্রান্ত দেড় হাজার পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা সত্ত্বেও তারা স্বীকার করেছেন যে, বিমানটির ভাগ্যে আসলে কী ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।