মাগুরা অফিস :
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার চরগোয়ালদাহ ও মালাইনগর গ্রামে শুক্রবার রাতে অর্ধশতাধিক হিন্দু বাড়িতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আহবান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। রাতের আধাঁরে পরিচয় গোপন রেখে এ ধরণের চিঠির ঘটনায় ওই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।
আজ শনিবার সকালে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াছিন কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
চর মালাইনগর গ্রামের দিপ্ত বালা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার পর মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন ব্যক্তি মাথায় হেলমেট ও পাঞ্জাবি পায়জামা পরিহিত অবস্থায় বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে বাড়ির কর্তাদের নামে লেখা এসব চিঠি পরিবারের সদস্যদের হাতে দিয়ে তারা দ্রæত স্থান ত্যাগ করে।
অজ্ঞাত ব্যক্তিদের চিঠিতে মুসলিম জামাতের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই সকল ব্যক্তিকে ইসলামের দাওয়াত সম্বলিত বিভিন্ন কথা উল্লেখ্যের সাথে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আহবান জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এখন উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও আতংক বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি শিশির শিকদার ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের শ্রীপুর উপজেলা সভাপতি অপূর্ব মিত্র ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। তারা এ কর্মকান্ডের পেছনে কোন গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আহমদ মাসুদ জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশের উর্ধ্বতণ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। এ ব্যাপারে ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছে চৌগাছি গ্রামের মঞ্জু বিশ্বাসের ছেলে ইউসুফ (৩৫), মহেশপুর গ্রামের ইয়াকুব মোল্যার ছেলে কুরবান (৩২), সাচিলাপুর গ্রামের আলীমুদ্দীনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৪০)।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সকল প্রকার নিরাপত্তায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ শেষে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াছিন কবীর জানান, প্রাথমিক দৃষ্টিতে চিঠিতে কোন হুমকি না থাকলেও রাতের আধাঁরে নিজেদের নাম পরিচয় গোপন করে কেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে এ ধরণের চিঠি দেয়া হলো তা গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় কোন ধরণের বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তার জন্য প্রশাসন সজাগ রয়েছে।
s