হোম খুলনাযশোর মশিয়াহাটি পানিতে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন : ভবদহে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমস্যা সমাধানসহ লুটেরা সিন্ডিকেটের বিচার দাবি

মশিয়াহাটি পানিতে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন : ভবদহে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমস্যা সমাধানসহ লুটেরা সিন্ডিকেটের বিচার দাবি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 7 ভিউজ

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি:

জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান, দ্রুত পানি নিষ্কাশন, টিআরএম চালুুসহ দুর্নীতিতে জড়িত লুটেরা সিন্ডিকেটের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি। বুধবার মনিরামপুর মশিয়াহাটী ডিগ্রি কলেজ মাঠে পানির মধ্যে অবস্থান নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল হামিদ বলেন, দীর্ঘ ৪৪ বছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই জনপদের মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার। এই জনপদে ভবদহ স্লুইসগেট একটি মরণ ফাঁদ। এটির কোনো কার্যকারিতা ও পানি নিষ্কাশনের ক্ষমতা নেই। পাম্পের মাধ্যমে সেচ প্রকল্প তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। ২০০ থেকে ৩০০ ফিট প্রশস্ত ও সুগভীর নদী হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে ১৫ থেকে ২৫ ফুট নদী ভরাট হয়ে গেছে। ৪৪ বছরে সংস্কারের নামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট লুটপাটের সুবিধার্থেই যে এসব করা হয়েছে সেটি প্রমাণিত।

তিনি বলেন, এ অঞ্চলের আবাদি ফসল, বসতবাড়ি ও স্কুল কলেজ, রাস্তাঘাটসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ হাজার হাজার কোটি টাকা। পানিতে ডুবে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এলাকা প্রাণ প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র হারিয়ে গেছে। অনেকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এর দায় সরকারের। জনগণ উদ্ভাবিত টিআরএম প্রকল্প গণ আন্দোলনের চাপে গৃহীত হলেও বিগত সরকার ২০১২ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার অজুহাতে বাতিল করে দেয়।

তিনি আরো বলেন, এই হামলা সংগঠিত হয় স্বপন ভট্টাচার্যের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সশস্ত্র গুন্ডা ঘের মালিকদের নেতৃত্বে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে এমপি ও মন্ত্রী বানানো হয়েছে। এই জনপদের ৫০/৬০ টি গ্রাম ইতোমধ্যে ডুবে গেছে। মনিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগর শুধু নয়; জলাবদ্ধতা বিস্তৃত হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া ও যশোর শহর পর্যন্ত। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে অবহিত করেছি যে, যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মোহনা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদী অববাহিকার ৪ শতাধিক গ্রাম আবাদি ফসল, বসত বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবরখানা, শ্মশান ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পানির তলে চলে যাবে।

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারবার স্বারকলিপি ও অনুরোধ করলেও লুটেরা সিন্ডিকেটের স্বার্থে আমাদের কথা কর্ণপাত করা হয়নি। উল্টো দুর্গত শতশত নারী পুরুষকে লাঠিপেটা ও রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। নানা ধরনের হয়রানি করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেয়া হয়। কিন্তু এখনো কোন ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড অর্বাচীনের মত মাটি খুঁড়াখুঁড়ি ও সেচ নির্ভর হয়ে বাস্তবতা ও গণবিরোধী অবস্থানে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে টিআরএম প্রকল্প চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি। আমডাঙ্গা খাল দ্রুত সংস্কার করতে হবে। সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও সিন্ডিকেটের বিচার করতে হবে। তা না হলে ৫ অক্টোবর ভবদহ দিবসে বেলা ১১টা থেকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবো ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী, সদস্য অনিল বিশ্বাস, নাজিম উদ্দিন, শিবপদ বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, সুকৃতি বিশ্বাস,সাংবাদিক উৎপল বিশ্বাস, শেখর বিশ্বাস, মহির উদ্দিন, রাজু আহমেদ, আজিজুর প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন