হোম অন্যান্যসারাদেশ মনিরামপুরে বাজারের সরকারি জমি দখলের মহোৎসব, পাকা স্থাপনা নির্মান

মনিরামপুরে বাজারের সরকারি জমি দখলের মহোৎসব, পাকা স্থাপনা নির্মান

কর্তৃক
০ মন্তব্য 128 ভিউজ

রিপন হোসেন সাজু,মনিরামপুর(যশোর) :
তখন যশোরের মনিরামপুরে খেদাপাড়া বাজারে সরকারি জমি দখলের যেন মহোৎসব চলছে। অভিযোগ রয়েছে এলাকার প্রভাবশালী একটি চক্র সরকারি জমি দখলের পর সেখানে নির্মান করছেন পাকা স্থাপনা। ইতিমধ্যে বাজারে যশোর-রাজগঞ্জ সড়কের পাশে ১৩ শতক সরকারি জমি দখলের পর প্রায় অর্ধশত পাকা স্থাপনা নির্মান করা হয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসন রয়েছে নির্বিকার। সরেজমিনে জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া বাজারের মাঝখানে যশোর-রাজগঞ্জ ডাবল লেনের সড়ক রয়েছে। এ বাজারের সাথে মনিরামপুর সংযোগ সড়কও রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই এ সড়ক দুটির দুই পাশে খেদাপাড়া বাজার অবস্থিত। বাজারে যশোর-রাজগঞ্জ সড়কের উত্তর এবং দক্ষিনপাশে ৪৯ নং খেদাপাড়া মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানে সরকারি জমি রয়েছে ১৩ শতক।

কিন্তু অভিযোগ রয়েছে এলাকার প্রভাবশালী একটি চক্র ইতিমধ্যে সড়ক ঘেষা সরকারি ওই জমি দখলের পর সেখানে পাকা স্থাপনা নির্মান করে ভোগদখল করে আসছেন। ইতিমধ্যে বাজারের উত্তরপাশের জমি দখলের পর সেখানে পাকা স্থাপনা(দোকান) নির্মান করেছেন অরুন কুমার, সাধন কুমার, পল্লী চিকিৎসক গোবিন্দ কুমার, ফারুক হোসেন, আমজাদ হোসেন, হুমায়ুন কবীর, রফিকুল ইসলাম, সুমন হোমেন, আইয়ুব আলী, আবদুর রহমান, শফিয়ার রহমান, মশিয়ার রহমান, আবু বক্কার, ইব্রাহিম হোসেন, ভরত সরকার, আলম হোসেন। একইভাবে বাজারের দক্ষিনপাশে জমি দখলের পর পাকা স্থাপনা(দোকান) নির্মান করেছেন আবদুস সালাম, আবু তাহের, আবু তাহের সরকার, হাফিজুর গাজী, গনেশ চক্রবর্তি, শাহ আলম, পল্লী চিকিৎসক লক্ষন, লক্ষিকান্ত পালসহ আরো কয়েকজন। বাজারের দুপাশে ১৩ শতক জমি দখলের পর প্রায় অর্ধশত পাকা স্থাপনা নির্মান করে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু জানাগেছে, জমি দখলের পর স্থাপনা নির্মানের সময় কেউ বাঁধা প্রদান না করায় দখলকারীরা দেদারসে স্থাপনা নির্মান করে সেখানে ব্যবসা করে আসছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন দেখাযায়, সরকারি জমি দখলের পর সেখানে পল্লী চিকিৎসক গোবিন্দ কুমার পাকা স্থাপনা নির্মান করাচ্ছেন। সরকারি জমিতে দোকান নির্মান করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ২০০০ সালে তিনি এই জমিটি সরকারের(ডিসি) কাছ থেকে লিজ নিয়ে দোকান নির্মান করেন। কিন্তু পরবর্তিতে আর কখনও লিজ নবায়ন করা হয়নি। তিনি জানান, বর্তমান ঘরটি জরাজির্ন হওয়ায় তিনি নতুন করে নির্মান করছেন। পার্শ্ববর্তি স্থানে ফারুক হোসেন নামে অপর এক ব্যবসায়ীও অনুরূপভাবে সরকারি জমিতে দোকান নির্মান করছেন। তবে এ সময় তাকে পাওয়া যায়নি। সরকারি জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মান করার ব্যাপারে কথা হয় মুদি দোকানী ফারুক হোসেন এবং ইউসুফ আলীর সাথে। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পিতারা এই জমিতে দোকান নির্মানের পর ব্যবসা করে আসছেন। সেই সূত্রে তারাও ব্যবসা করে চলেছেন। বৈধ-অবৈধ সম্পর্কে তারা কিছুই জানেননা উল্লেখ করেন। তবে ফারুক হোসেন জানান, একবার সরকারের কাছ থেকে জমি লিজ নেয়া হয়েছিল। এর বেশি কিছু তিনি জানাতে পারেননি। এ সময় কথা হয় বাজার কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন এবং সেক্রটারী লোকমান হোসেনের সাথে।

তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সম্পত্তি দখল করে প্রায় অর্ধশত পাকা স্থাপনা নির্মান করে এলাকার লোকজন ভোগদখল করে আসছে। সরকারি সম্পত্তি থেকে সকল অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন বাজার কমিটির এ নেতৃবৃন্দ। তবে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৃব্রত চক্রবর্তীর দাবি, যারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন তাদের অন্যত্র পূনর্বাসন করে উচ্ছেদ করা হোক। ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা আবদুস সাত্তার জানান, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য ইতিমধ্যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। খেদাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আবদুল হক জানান, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে সড়ক এবং বাজার প্রসস্থকরনের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে কিছুই জানেননা উল্লেখ করে সদ্যযোগদানকৃত সহকারি কমিশনার(ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, খোঁজ খবর নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন