হোম খুলনাযশোর মনিরামপুরে দুই হাতের কনুই দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে জাহিদুল

মনিরামপুরে দুই হাতের কনুই দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে জাহিদুল

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 36 ভিউজ

মরিরামপুর (যশোর)প্রতিনিধি:

অদম্য ইচ্ছাশক্তির অধিকারী শারীরিক প্রতিবন্ধী জাহিদুল ইসলাম দুই হাতের কনুই দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। জাহিদুলের হাত আছে তবে কনুই পর্যন্ত। কোন আঙুল না থাকায় কোন কিছু স্বাভাবিকভাবে সে ধরতে পারে না। তবুও সে থেমে থাকেনি। দুই হাতের কনুইয়ের সাহায্যে কলম ধরে সে এবার মনিবিক শাখার নিয়মিত ছাত্র হিসেবে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। সে মনিরামপুর সরকারি কলেজের ছাত্র । পরীক্ষা দিচ্ছে মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে। জাহিদুল ইসলাম যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১২ নং শ্যামকূড় ইউনিয়নের আগরহাটি গ্রামের মাহবুর রহমানের ছেলে।

জানা যায়, ২০০৮ সালে জাহিদুল যখন তৃতীয় পড়ে সেই সময় বাড়ির পাশে একটি তিন তলা ভবনের ছাদে খেলা করতে যেয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে গুরুতর আহত হয়। আহত জাহিদুলকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কেটে ফেলা হয় তার দুই কনুইয়ের হাতের নিচের অংশ। এ অবস্থায় সে দুই হাতের কনুই ব্যবহার করে আস্তে আস্তে সব কাজ করতে শিখে।

লেখালেখির কাজটা তার জন্য দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। তবুও সে থেমে থাকেনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে দুই হাতের কনুই দিয়ে কলম চেপে ধরে লেখার কাজটি শিখে। কয়েক বছর পড়ালেখা বন্ধ থাকার পর আবার ভর্তি হয় তৃতীয় শ্রেণিতে। স্থানীয় লাউড়ি-রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির পাঠ সম্পন্ন করে পাশ্ববর্তী ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সফলতার সালে উত্তীর্ণ হয়ে মণিরামপুর সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। লেখাপড়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে সে চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। মণিরামপুর মহিলা কলেজ কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় ২০৭ নম্বর কক্ষে তার আসন পড়েছে। পরীক্ষার তৃতীয় দিনে ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে ওই কেন্দ্রে যেয়ে দেখা যায় অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের সাথেই তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারো সহযোগিতা ছাড়াই সে দুই হাতের কনুই দিয়ে সে পরীক্ষার খাতায় লিখছে।

জাহিদুলের পিতা মাহবুর রহমান এ প্রতিবেদককে জানান, বিদ্যুৎস্পর্শে তার ছেলের দুই হাতের নিচের অর্ধেক অংশ কেটে ফেলতে হয়। কনুইয়ের সাহায্যে সে নিজেই নিজের কাজ করতে পারে। লেখাপড়ার প্রতি অদম্য ইচ্ছা থাকায় এসএসসি পাশ করার পর তাকে কলেজে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সে সাইকেল চালিয়ে কলেজে যাই। বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে। নিজের সব কাজই সে নিজেই করতে পারে।

মনিরামপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জি এম রবিউল ইসলাম ফারুকী বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীতাকে হার মানিয়ে জাহিদুল চলতি এইসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সুযোগ পেলে সে উচ্চ শিক্ষার চূড়ান্ত শীখরে পৌছে যাবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন