হোম অন্যান্যসারাদেশ মণিরামপুরে শুরু হয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, বঞ্চিত হচ্ছে অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা

মণিরামপুরে শুরু হয়েছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, বঞ্চিত হচ্ছে অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা

কর্তৃক
০ মন্তব্য 103 ভিউজ

রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর (যশোর) :

করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মণিরামপুর উপজেলায়ও অনলাইনে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। উপজেলার ১২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন। তবে অসচ্ছল অভিভাবকদের হাতে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার না থাকায় অনলাইন ক্লাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বড় অংশের শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অর্ধবার্ষিকীসহ সব পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সরকারি আদেশে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মনিরামপুরে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মনিরামপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২০৪টি।

এর মধ্যে মাধ্যমিক স্কুল ১২০টি, মাদ্রাসা ৬৯টি এবং কলেজ রয়েছে ১৫টি। এদের মধ্য থেকে আইসিটিতে দক্ষতা যাচাই-বাছাই করে প্রথম ধাপে নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়ে শুরু করা হয়েছে অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র জানান, শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাসের জন্য কারিগরী সহযোগিতা করতে আইসিটির ১১ জন মাস্টার ট্রেইনারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাস তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মাসুদ হোসেন।

মাসুদ হোসেন জানান, কোনো কোনো শিক্ষক নির্ধারিত বিষয়ের ওপর ক্লাস রেকর্ডিং করে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজে আপলোড করছেন। আবার কোনো কোনো শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজে সরাসরি ক্লাস নিচ্ছেন। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী সামর্থ্য অনুযায়ী স্মার্টফোন, কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন। তবে ইচ্ছাথাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষার্থী পরিবারের অর্থনৈতিক অভাব অনটনের কারণে অনলাইন ক্লাসের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান জানায়, প্রতিদিন সে ঘরে বসে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়ে বেশ সুফল পাচ্ছে। আবার দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র জোবায়ের হোসেন জানায়, প্রবল ইচ্ছাথাকা সত্ত্বেও স্মার্টফোনও কম্পিউটার না থাকায় তার পক্ষে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক অভিভাবক জানান, অর্থনৈতিক অনটনের কারণে তার পক্ষে ছেলেকে এখন স্মার্টফোন দেয়া দুরুহ হয়ে পড়েছে। জালাল উদ্দিন নামে এক শিক্ষক জানান, তার মতে অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থা ভালো। কিন্তু অধিক প্রচার না হওয়া এবং উপকরণ না থাকায় অনলাইন ক্লাসের সুফল অধিকাংশ শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হোসেন জানান, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সকল মাস্টার ট্রেইনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে একাধিকবার সভা( অনলাইনে)করা হয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া পুসিয়ে দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখতে হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন