জাতীয় ডেস্ক:
মুসলিম নাকি হিন্দুধর্মাবলম্বী; এই বিতর্কে মর্গে পড়ে আছে রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে নিহত এক তরুণীর মরদেহ। বাবা দাবি করা ব্যক্তি বলছেন, তার নাম বৃষ্টি খাতুন। তিনি ও তার মেয়েসহ পরিবার মুসলিম ধর্মাবলম্বী। সেই অনুযায়ী দেখান বৃষ্টির জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কপিও। তবে সহকর্মী ও পরিচতরা বলছেন, মরদেহটি অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর।
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা থেকে ছুটে ঢাকায় এসেছেন বৃষ্টি খাতুনের বাবা সবুজ শেখ। রাত থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে পড়ে থাকা মেয়ের মরদেহ দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করেন। তবে এরপরই বাধে বিপত্তি। মরদেহটি দেখে তার সহকর্মী ও পরিচিতরা দাবি করেন, নিহত তরুণীর নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। সনাতন ধর্মের অনুসারি তিনি। তবে তাদের এই দাবি কোনোভাবেই মানতে নারাজ বাবা পরিচয় দেয়া মুসলিম ধর্মাবলম্বী সবুজ শেখ।
সবুজ শেখ ও স্বজনরা তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে তাকে বৃষ্টি খাতুন বলে দাবি করছিলেন, ঠিক তখন সনাতন ধর্মের কয়েকজন তার ফেসবুক আইডি ও সিভি দেখাচ্ছিলেন সাংবাদিকদের। তাদের চাওয়া, পূজার্চনা করা অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল বাবা- মাকে খুঁজে বের করে তাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হোক।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব দে বলেন, নিহত ওই তরুণীর নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। সনাতন ধর্মের অনুসারি তিনি। পূজার্চনায় নিয়মিত অংশ নিতেন রমনা কালী মন্দির ও ঢাকেশ্বরীতে।
বিপ্লব দে ও অভিশ্রুতির সহকর্মীরা দাবি করেন, সে দ্যা রিপোর্ট অনলাইন পোর্টালের ইলেকশন কমিশন বিটের রিপোর্টার। এই নামেই সবাই চেনেন তাকে। অন্য একটি অফিসে যেই সিভি পাঠিয়েছিলেন সেখানেও তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী।
রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান এই তরুণীসহ ১০ জন। তাদের মধ্যে ৯ জনের মরদেহ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়ে গেলেও মর্গেই পড়ে রয়েছে এই তরুণীর মরদেহ।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৯টা ৫৬ মিনিটে। পরে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লে আরও ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ, আনসার, র্যাব ও এনএসআই। ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৬ জন।