হোম ফিচার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল: তথ্যমন্ত্রী

রাজনীতি ডেস্ক :

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা খর্ব করেছে এবং পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়ে তাদের গুরুত্ব হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ সার্কিট হাউসে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী।

এসময় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রসঙ্গে নেতিবাচক মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তখন সেই বিচার বন্ধ করার জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিল। দেশে যখন মানবতাকে ভুলুণ্ঠিত করে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার মহোৎসব চলেছে, তখন তারা কোনো বিবৃতি দেয়নি। ফিলিস্তিনে যখন শিশুদের পাথর নিক্ষেপের প্রত্যুত্তরে ইসরাইলি বাহিনী পাখি শিকারের মতো গুলি করে মানুষ শিকার করে, তখন অনেক ক্ষেত্রে তারা নিশ্চুপ ছিল।’

এসব কারণে ইতোমধ্যেই পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে চিহ্নিত অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কী বলল, সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়, কিন্তু কিছু কিছু পত্রিকা খুব গুরুত্ব দিয়ে ছাপায় বলেও মন্তব্য করেন ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘তাদের রিপোর্ট পড়ে দেখলাম, এখান থেকে আইন ও শালিসকেন্দ্র যেগুলো পাঠিয়েছে সেগুলোই তারা হুবহু ছাপিয়েছে। সরকারের সমালোচনায় মুখর এবং দেশবিরোধী অপতৎপরতায় যুক্ত নির্দিষ্ট দু’একটি সূত্র থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট পেশ করে, যা আসলে আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশবিশেষ, অন্যকিছু নয়।’

বিএনপি’র জাতীয় সরকার গঠনের নানা প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম-তালেবান সবাইকে নিয়ে বিএনপি একটি জোট গঠনের চেষ্টা করেছিল এবং গঠনও করেছিল। কিন্তু সেই জোটের ফলাফল হচ্ছে নির্বাচনে মাত্র পাঁচটি আসন। এবারও তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দলকে কাছে টানার চেষ্টা করছে। সেজন্য নির্বাচনের পরে কোন ধরনের সরকার গঠন করবে সেটি নিয়ে মির্জা ফখরুল সাহেব একটি বক্তব্য রেখেছেন। তারা তো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবে না বলছে, নির্বাচনের পরে কি সরকার গঠন করবে তার আগে নির্বাচনে অংশ নেবে কি না সেটি ফয়সালা করুক।’

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এরপর নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।

সেখানে তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলে বেড়াচ্ছে নিরপেক্ষ সরকার না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আর কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। নির্বাচন সরকারের অধীনে হয় না। নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন কমিশনার স্বাধীন। সুতরাং স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই আগামী নির্বাচনের ট্রেনে উঠবে কি উঠবে না সেটি বিএনপির সিদ্ধান্তের ব্যাপার। নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না।’

নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে পুনরায় আব্দুল মালেককে সভাপতি ও সাধন চন্দ্র মজুমদারকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

 

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন