আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে ১৩ রুশ পাইলট প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত এই পাইটদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর রয়টার্সের।
বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে পাইলটদের নিহত হওয়ার বিষয়টি সামরিক ব্লগারদের এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াগনার বাহিনী রুশ বাহিনীর বেশ কয়েকটি বিমান ও হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে। এতে ১৩ জন পাইলট নিহত হন। গত সোমবার (২৬ জুন) নিহত পাইলটদের প্রতি প্রদ্ধা জানান প্রেসিডেন্ট পুতিন।
গত সপ্তাহে (২৩ জুন) সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘোষণার পর ওইদিন রাতের মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী ও রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরের সামরিক দফতরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ওয়াগনার বাহিনী। এছাড়া ভরোনেঝ নামে আরেকটি শহরের বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা দখল করে।
এরপর তারা সশস্ত্র বহর নিয়ে পশ্চিম রাশিয়ার মধ্যদিয়ে বিদ্যুৎগতিতে উত্তরের দিকে রাজধানী মস্কোর দিকে এগোতে থাকে। তবে পথিপথে রুশ বাহিনীর ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়ে তারা।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, রুশ সামরিক হেলিকপ্টার ওয়াগনার যোদ্ধাদের বহরের ওপর গোলাবর্ষণ করা হয়। এ সময় ওয়াগনার বাহিনী গুলি করে বেশ কয়েকটি সামরিক হেলিকপ্টার ভূপাতিত করে।
ওয়াগনারের বিদ্রোহের পর সোমবার পুতিন এক ভাষণে বলেন, ‘নিহত পাইলটদের সাহস ও আত্মত্যাগ রাশিয়াকে বিধ্বংসী পরিণতি থেকে বাঁচিয়েছিল, তবে কতজন পাইলট মারা গেছেন বা কয়টি বিমান ও হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে তার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বেশ কিছু রুশ টেলিগ্রাম চ্যানেল রাশিয়ার সামরিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে। যার মধ্যে একটি ‘ব্লগ রাইবার’। তাদের ১০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। বিদ্রোহের পরদিন (২৪ জুন) তারা এক প্রতিবেদনে জানায়, দিনব্যাপী বিদ্রোহে ১৩ জন রুশ পাইলট নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, বিধ্বস্ত বিমানের মধ্যে ৩টি এমআই-৮ এমটিপিআর ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার হেলিকপ্টার ও একটি আইএল-১৮ বিমান।
রয়টার্স জানিয়েছে, তারা স্বাধীনভাবে প্রতিবেদনগুলো যাচাই করতে পারেনি। কী পরিস্থিতিতে বিমান ও হেলিকপ্টারগুলো গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে তাও স্পষ্ট নয়।
পুতিন বলেছেন, রক্তপাত এড়াতে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়াগনারের বিদ্রোহ চলতে দিয়েছিলেন। তারপর যেসব মৃত্যু হয়েছে তার জন্য সম্পূর্ণ ওয়াগনার দায়ী।
পুতিন তার ভাষণে ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজিনি প্রিগোজিনের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ওয়াগনার বাহিনী সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তারা তাদেরকে না হয় বেলারুশে স্থানান্তরিত হতে হবে বা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে হবে।