হোম অন্যান্যসারাদেশ বসন্ত-ভালোবাসায় রঙিন ঢাবি ক্যাম্পাস

অনলাইন ডেস্ক :

‘ভালোবাসি, ভালোবাসি— এ সুরে কাছে দূরে জ্বলে স্থলে বাজায় বাঁশি…’ কবিগুরুর এ গানের সুর এখন বাজছে যেন প্রকৃতিতে। সেই সুর আবার বুঝি ঢেউ তুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায়। একদিকে বাসন্তী রঙ, অন্যদিকে ভালোবাসার রঙের জোয়ার বইছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সকাল থেকেই ঢাবির টিএসসি ও আশপাশের এলাকা নারী, পুরুষ ও শিশুদের পদচারণায় উৎসবের আমেজে মুখর হতে থাকে। টিএসসি, অপরাজেয় বাংলা, বটতলা, হাকিম চত্বর, ভিসি চত্বর, ফুলার রোড, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সবই যেন পরিণত হয়েছে প্রেমিক যুগলদের মিলনমেলায়।

dhakapost

নারীরা বাসন্তি রঙের শাড়ির সঙ্গে মিল রেখে চুড়ি, লিপস্টিক ও মাথায় পরেছেন ফুলের ক্রাউন। ছেলেরাও কম যাননি, প্রিয়জনদের সঙ্গে মিলিয়ে তারাও পরেছেন পাঞ্জাবি। প্রিয় মানুষটিকে আজ ভালোবাসার কথা জানাবেন কিংবা আবারও বলবেন ‘ভালোবাসি’— তারই যেন প্রতিযোগিতা চলছে।

রাজধানীর মিরপুর থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রিয় মানুষকে নিয়ে এসেছেন তানজিম হাসান।  তিনি বলেন, ভালোবাসার জন্য স্পেশাল কোনো দিনের প্রয়োজন না হলেও আজকের দিনটিতে আমরা বিশেষভাবে উদযাপন করার সুযোগ পাই। এ দিনটা শুধু আমাদের। তাই প্রিয়তমাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। আজ সারাদিন হাতে হাত রেখে ঘুরব, খাব এবং বইমেলায় যাব।

dhakapost

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমিক যুগল সাকিব-সায়মা  বলেন, নিজ ক্যাম্পাসে এই প্রথম ভালোবাসা দিবস উদযাপন করছি। আজকের দিনটি প্রাণভরে উপভোগ করতে চাই। আজকের দিনটি আমাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ভালোবাসা দিবসে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাহমিদ। তিনি বলেন, ভালোবাসা দিবস বলতে এখন শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক মনে করা হয়। আসলে ভালোবাসা প্রকাশ হতে পারে বন্ধু, বাবা-মা, পরিবার-পরিজন সবার প্রতিই। তাই আমরা বন্ধুরা মিলেই আজ দিনটিকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি।

dhakapost

দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরের সামনে ফুল বিক্রি করতে দেখা গেছে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের। ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অন্য দিনের তুলনায় দাম এবং বিক্রি দুটোই বেশি বলে জানান তারা। ফুল বিক্রেতা নাজমুল বলেন, আজ ফুলের চাহিদা বেশি। অনেক ফুল বিক্রি হচ্ছে, বিশেষ করে গোলাপ। আজ গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৫০-১০০ টাকায়।

এদিকে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা সবার মরমে পৌঁছে দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় সকাল থেকে শুরু হয় ‘বসন্ত বরণ’ আয়োজন। সকাল ৭টা থেকে সমবেত বাদ্যযন্ত্র ও রাগাশ্রয়ী সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়। জাতীয় বসন্ত উৎসব উৎযাপন পরিষদ আয়োজিত এই অনুষ্ঠান চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত। বিকেলে চারুকলায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে আবৃত্তিশিল্পী আহসান উল্লাহ তমাল ও নুসরাত ইয়াসমিন রুম্পার সঞ্চালনায় একক আবৃত্তি পাঠ করেন ভাস্বর বন্দোপাধ্যায় ও নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি। সংগীত পরিবেশন করেন ফাহিম হোসেন চৌধুরী, সালমা আকবর, লাইসা আহমেদ লিসা, প্রিয়াংকা গোপ, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস ও সুচি দেবনাথ। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে গীতাঞ্জলি, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, বহ্নিশিখা ও বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস (ওয়াইজঘাট)।

dhakapost

দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে সুরঙ্গমা, ধৃতি, স্বপ্ন বিকাশ কলা কেন্দ্র, নৃত্যম, ভাবনা, গৌড়ীয় নৃত্য সারথী, নৃত্যনন্দন, সাধনা সংস্কৃতি মন্ডল, স্পন্দন। এছাড়াও ছিল আদিবাসী চাকমাদের দলীয় নৃত্য পরিবেশনা।

‘বসন্ত কথন’ শীর্ষক প্রথম পর্বের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি স্থপতি সফিউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সহ সভাপতি কাজল দেবনাথ ও সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন