আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের অবৈধ দখলদারি প্রশ্নে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মতামত দেয়ার আহ্বান জানিয়ে করা জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে তোলা ওই প্রস্তাবটি নিয়ে ভোটাভুটি হয়।
প্রস্তাবের পক্ষে বাংলাদেশসহ মোট ৮৭টি দেশ ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে মাত্র ২৬টি দেশ। ভোটদানে বিরত ছিল ৫৩টি দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। জাতিসংঘে এ প্রস্তাব পাস হওয়াকে বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে ইসরাইলের অপরাধ উন্মোচিত হবে।
‘ইসরাইলি প্রাকটিসেস অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ অ্যাফেক্টিং দা রাইটস অব দা প্যালেস্টিনিয়ান পিপল অ্যান্ড আদার আরবস অব দ্য অকুপাইড টেরিটরিজ’ শীর্ষক প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক আদালতকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি দখল, সংযুক্তকরণ ও ধারাবাহিকভাবে বসতি নির্মাণসহ পবিত্র নগরী জেরুজালেমের জনমিতির বৈশিষ্ট্য ও ঘনত্ব পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে আইনি মতামত দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে কীভাবে ইসরাইলের এসব নীতি ও এর অনুশীলন দখলদারিত্বের আইনি অবস্থাকে প্রভাবিত করছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কী ধরনের আইনি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, সে বিষয়েও খতিয়ে দেখে পরামর্শ দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরাইলের ইতিহাসের সবচেয়ে কট্টরপন্থি সরকার দায়িত্ব নেয়। এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলের দখলদারিত্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবটি পাস হলো।
গত বুধবার নেতানিয়াহু তার সরকারের এজেন্ডা প্রকাশ করেছেন। তাতে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ইসরাইলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, এই এজেন্ডায় ইহুদি জনগণের ইসরাইলের ভূমির ‘সব’ অংশের একচেটিয়া ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এজেন্ডায় যে ভূমির কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে বিতর্কিত গোলান হাইটস ও জুডিয়া এবং সামারিয়া অঞ্চল।
শুক্রবারের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরাইল। দেশটিকে অনুসরণ করেছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, জার্মানি ও ইতালি। বিপরীতে মুসলিম ও আরব দেশগুলো প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এমনকি ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে যেমন মিশর, জর্ডান, মরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও আজারবাইজানও পক্ষে ভোট দিয়েছে।
মুসলিম ও আরব দেশগুলোকে অনুসরণ করে পক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, ইরান, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, রাশিয়া ও সৌদি আরবের মতো প্রভাবশালী দেশগুলোও। বেশ কয়েকটি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে তথা নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, ব্রাজিল, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জাপান, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।