জাতীয় ডেস্ক :
নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন প্রতিহিংসায় রূপ না নেয়, সেভাবে সব প্রার্থীকে আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। গতকাল রোববার রাতে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রশাসন সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
চতুর্থ ধাপে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জেলার আত্রাই, মহাদেবপুর ও ধামইরহাট উপজেলায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মতবিনিময় সভায় কবিতা খানম বলেন, মারামারি কোনো দিনই কাম্য নয়। মারামারি হলে কেউ না কেউ আহত কিংবা নিহত হয়। কারও পরিবার নিঃস্ব হোক জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেটা কেউ চাইবে না। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন প্রতিহিংসায় রূপ না নেয় সেভাবে আচরণ করুন।
কবিতা খানম আরও বলেন, যখন কোনো কিছুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, সেখানে জয়-পরাজয় থাকে। জয়ের আশা যেমন করবেন, আবার কোনো কারণে যদি পরাজিত হন, সেটা মেনে নেওয়ার মানসিকতাও থাকতে হবে। অসহিষ্ণু হলে বিশৃঙ্খলা বাড়বে। আপনারা নিজেদের আইনের মধ্যে রাখুন। আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাতে হবে।
ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে প্রার্থীদের সহযোগিতা কামনা করে কবিতা খানম বলেন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ না করে, ভোটের পরিবেশ যাতে সুষ্ঠু থাকে, প্রত্যেকে যাতে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারে, সেটা মেনে চলেন। নিজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। ভোটাররা আপনাদের পক্ষে যাতে ভোট দেয়, সেভাবে প্রচারণা চালান। কাউকে জোর করে ভোট নিতে পারবেন না। ভোটারদের মন জয় করেই ভোট নিতে হবে। আপনারা ভোটারদের বলেন, পরিবেশ সুষ্ঠু থাকবে আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসুন। শুধু নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, আপনারাও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন।
নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কবিতা খানম বলেন, ‘কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার-প্রচারণা চালালে, আপনারা তাকে একজন প্রার্থী গণ্য করবেন। তার অন্য কোনো পরিচয় থাকবে না। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের সত্যতা থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। প্রত্যেক প্রার্থী একই ধরনের আইনি সেবা পাবেন। ভোটের আগে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হোক, এটা আমরা চাই না। নির্বাচনে যেন লেভেল-প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত থাকে, সেটা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে।’
নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, চতুর্থ ধাপে নওগাঁয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দুই দিন নির্বাচনী এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনি আচরণবিধির বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দেখা হবে না সে কোন দলের প্রার্থী।
এ সময় তিন উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনের পরিবেশ বিষয়ে শঙ্কা ও নানা অভিযোগের কথা নির্বাচন কমিশনারের কাছে তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মো. ফজলুল কাদের, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান প্রমুখ।