বাণিজ্য ডেস্ক :
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে মাঠভর্তি ফসল রয়েছে। আমন ধানের অবস্থা ভালো, বাম্পার ফলন হবে। এ ছাড়া দেশে যথেষ্ট খাদ্য মজুত রয়েছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাংলাদেশে খাদ্যের কোনো সংকট হবে না, দুর্ভিক্ষ হবে না।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হৈবৎপুরে আমন ধান কাটা উৎসব ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে কৃষিমন্ত্রী গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ক্ষেত পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, কিন্তু সংরক্ষণের প্রযুক্তি না থাকায় অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এই আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষি মন্ত্রণালয় রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করছে। গত দুই বছরে প্রায় ১০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘অফ সিজনে বা গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এর সম্ভাবনাও অনেক। কৃষকদের বীজ, সার, প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। আর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ জনপ্রিয় করতে পারলে আমরা পেঁয়াজে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন নয়, রফতানিও করতে পারব।’
সার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সারের মজুত ও সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বোরো মৌসুমে সার সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই।
পরে মন্ত্রী কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র ঘুরে দেখেন।
জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছেন। তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে, প্রয়োজনে আরও তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হবে। তবে জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো কৃষিযন্ত্র তৈরিতে শিল্পোদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে ও বিনিয়োগ করতে হবে। তাহলে কৃষিযন্ত্রে আমদনি নির্ভরতা কমবে।
এ ছাড়া এদিন কৃষিমন্ত্রী পলিহাউসে শাকসবজি ও চারা চাষ, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আনার চাষ, ড্রাগন, পেয়ারাসহ বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিকে লাভজনক করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। শুধু ধান আর পাট উৎপাদন না করে উচ্চমূল্যের ফসল ও ফল চাষ করতে হবে, তাহলেই কৃষি লাভজনক হবে।
দিনের শেষে সন্ধ্যায় দামুড়হুদার মেহেরুন পার্কে নবান্ন উৎসব ও কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। এ ছাড়া কৃষকদের মধ্যে কৃষিযন্ত্র বিতরণ করেন।
এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।