বাণিজ্য ডেস্ক:
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভোক্তারা কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা দরে পেঁয়াজ পেলে খুশি হবেন। তবে এটা করলে কৃষকরা দাম পাবেন না। পেঁয়াজের দাম ৪৫-৫০ টাকা হলে ভোক্তা এবং কৃষক দুজনই খুশি থাকবেন।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক ছায়া সংসদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, কৃষকের পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ কেজি প্রতি ১৮-২২ টাকা। এক্ষেত্রে কৃষক ও ভোক্তা উভয়কে খুশি করতে হলে মধ্যবর্তী দামের দিকে জোর দেন মন্ত্রী। সে লক্ষ্যে পেঁয়াজের ন্যায্য দাম কম করে হলেও ৪৫-৫০ টাকা হওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
আমদানি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দেশে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, কিন্তু পরবর্তীতে নানা কারণে ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
আমদানি করলে দাম কমে এমন প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়ার পর সে পণ্যের আমদানির ঘোষণা দিলে ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে দেন। এটা তাদের মূল্যবোধের সমস্যা। অন্যান্য দেশে ঈদ-রমজানকে কেন্দ্র করে যেখানে দাম কমে, বাংলাদেশে সেখানে উল্টো। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কদিনের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা দরে।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ না থাকায় দাম বাড়ছে। আমদানির পরিমাণ না বাড়লে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
এদিকে সময় সংবাদের স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, হিলি স্থলবন্দরে সপ্তাহের ব্যবধানে টন প্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকার ওপরে। কদিন আগেও হিলি বন্দরে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকলেও কয়েকদিন থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে দাম।
আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ছে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা জানান, হিলি স্থলবন্দরে ভারতের মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। হিলি থেকে দূরত্ব প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি। আসতে সময় লাগে ৪-৫ দিন। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত বন্যার কারণে সেদেশের কৃষকরা জমি থেকে পেঁয়াজ তুলতে পারছে না। যে কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এজন্য দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিজদের খেয়াল খুশিমতো দাম বাড়াচ্ছে। সিন্ডিকেটের প্রভাব বন্ধ করতে না পারলে বাজার স্বাভাবিক হবে না।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে সিন্ডিকেটের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যেত। কিন্তু সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক না করে কয়েকটি সিন্ডিকেট বন্ধ করে দিলে তারা বাজারে পণ্য দেয়া বন্ধ করে দিবে। এতে করে ভোক্তারা বিপাকে পড়বে। তবে সিন্ডিকেটের প্রভাব যাতে না পড়ে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় করছে।