হোম অন্যান্যস্বাস্থ্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত শিশুরা, রয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

বর্ষা মৌসুমে টাইফয়েড, কলেরা, হেপাটাইটিসসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সেই সঙ্গে রয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। চিকিৎসকরা বলছেন, সচেতনতার অভাবেই এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তাদের বিশেষ যত্নের পাশাপাশি লক্ষণ বুঝে হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

সরেজমিন ঢাকা শিশু হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সাড়ে তিন বছর বয়সী সায়েম সামান্য ঠান্ডা জ্বর থেকে খিঁচুনিসহ নানান জটিলতায় হাসপাতালের বিছানায় ক্লান্ত শরীরে ঘুমুচ্ছে। দিনের পর দিন মায়ের অপেক্ষা কখন তার সন্তান সুস্থ হবে। তার ওপর মাথায় ঘুরছে গত বছর ডেঙ্গুতে হারিয়ে ফেলা আরেক সন্তানের শোক।

তিনি বলেন, ‘গত বছর চার বছরের বাচ্চা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এই হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। পরদিন সকালে সে মারা যায়। এ বছর আমার আরেক বাচ্চার ডেঙ্গু হয়েছে।’

হাসপাতালের প্রতিটি বিছানায় শুয়ে থাকা শিশুদের আলাদা গল্প। তবে ছোট সমস্যা থেকে বড় জটিলতা পর্যন্ত গড়িয়েছে সমস্যা, সেই গল্প নেহাত কম নয়।

এক শিশুর মা বলেন, ‘প্রথমে জ্বর ও ঠান্ডা কাশি ছিল। ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাই হাসপাতালে এনে ভর্তি করিয়েছি।’

চিকিৎসকরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে কলেরা, ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিসসহ পানিবাহিত অন্যান্য রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু জ্বরের রোগীও রয়েছে অনেক। চিকিৎসকদের পরামর্শ, জরুরি কিছু লক্ষণ দেখা মাত্রই দ্রুত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের আরিএমও ডা. মো. নূর-উজ-জামান (হিমেল) সময় সংবাদকে বলেন, বাসায় যদি দেখা যায় যে বাচ্চার প্রচুর পরিমাণে জ্বর উঠেছে, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বা খাওয়ার সমস্যা হচ্ছে, তাহলে সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের উচিত হবে কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া।

বর্ষার এই মৌসুমে রাস্তাঘাটে নোংরা পানি জমে থাকায় অসুখ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া পরিচ্ছন্নতার অভাবও অসুখের অন্যতম কারণ।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান (বিপুল) বলেন, ‘ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট অথবা ডায়রিয়াজনিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে চাইলে আমাদের প্রথম এবং প্রধান কথা হচ্ছে বৃষ্টির পানি থেকে সতর্ক থাকা। আর ঠান্ডা, কাশি হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ঘরেও চিকিৎসা নেয়া যায়। প্যারাসিটামল এবং তরল খাবার খেতে হবে। এ ছাড়া ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

এ সময় পোকা-মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে। খাবারের ওপর বসে তারা জীবাণু ছড়ায়। ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে খাদ্যনালিতে সংক্রমণ ছড়ায়। তাই বর্ষায় সচেতন থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন